BanglaFact বিশ্বাস করে যে ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য গণতন্ত্র, সমাজ ও নাগরিক সচেতনতার জন্য একটি বড় হুমকি। সে বিবেচনাতেই আমরা একটি সুসংগঠিত, নির্ভরযোগ্য ও দায়িত্বশীল তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করি, যার মাধ্যমে সত্যের ভিত্তিতে বিকৃত বা ভুয়া তথ্য চিহ্নিত ও প্রতিরোধ করা যায়।
আমাদের ফ্যাক্টচেকিং প্রক্রিয়া শুরু হয় এমন তথ্য নির্বাচন দিয়ে, যা জনমতকে প্রভাবিত করতে পারে, নীতিনির্ধারনে প্রভাব ফেলতে পারে বা কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির প্রতি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও প্রচলিত সংবাদমাধ্যম নিয়মিত পর্যালোচনা করি এবং সেখান থেকে ভাইরাল বা বিতর্কিত দাবি শনাক্ত করি। তথ্যটি নির্বাচন করার পর আমরা সেটির উৎস এবং প্রেক্ষাপট খতিয়ে দেখি—যেমন কে প্রথম এটি ছড়িয়েছে, কোথায় এটি প্রকাশিত হয়েছে, এবং তা কী উদ্দেশ্যে পরিবেশিত হয়েছে। প্রয়োজনে, সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমস্ট্যাম্প, পুরনো স্ক্রিনশট, আর্টিকেল আর্কাইভ কিংবা ওপেন সোর্স টুলসের সহায়তায় তথ্যের উৎস শনাক্ত করা হয়।
তথ্য যাচাইয়ের পরবর্তী ধাপে আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য জানতে চেষ্টা করি। কোনো দাবি যদি কোনো রাজনৈতিক নেতা, প্রতিষ্ঠান বা সংবাদমাধ্যম কর্তৃক প্রচারিত হয়ে থাকে, তবে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চাই। এতে করে দাবিটির মূল অর্থ ও প্রাসঙ্গিকতা আরও পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়। পাশাপাশি, আমরা স্বতন্ত্র উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করি—যেমন সরকারি রেকর্ড, গবেষণা প্রতিবেদন, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ, যেগুলো যাচাইযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।
বিশেষজ্ঞ মতামতের প্রয়োজনে আমরা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের স্বীকৃত পেশাজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। যেমন কোনো স্বাস্থ্যবিষয়ক দাবির সত্যতা যাচাই করতে চিকিৎসাবিদ বা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করি। একইভাবে, ছবি বা ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে প্রযুক্তি বিশ্লেষক বা OSINT (Open-Source Intelligence) দক্ষদের পরামর্শ নেওয়া হয়। এভাবে, একটি দাবির ব্যাপারে আমাদের দল বহুমাত্রিক উৎস থেকে তথ্য একত্রিত করে এবং প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ সম্পন্ন করে।
সব তথ্য বিশ্লেষণের পর আমরা প্রতিবেদন তৈরি করি। এই প্রতিবেদনগুলো এমনভাবে লেখা হয় যাতে পাঠক সহজেই বুঝতে পারেন কী দাবি করা হয়েছে, সেটি কেন সন্দেহজনক, এবং আমাদের অনুসন্ধানে কী উঠে এসেছে। প্রতিটি রিপোর্টে আমরা তথ্যের উৎস, যাচাইয়ের ধাপ এবং প্রাসঙ্গিক প্রমাণ উল্লেখ করি, যাতে রিপোর্টের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা বজায় থাকে।
আমাদের বিশ্বাস, পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং দায়িত্বশীল তথ্য যাচাই কেবল মিথ্যা রোধে সহায়তা করে না, বরং একটি সচেতন ও তথ্যনির্ভর সমাজ গঠনের পথও প্রসারিত করে। BanglaFact-এর প্রতিটি কাজেই এই বিশ্বাস ও মূল্যবোধ প্রতিফলিত হয়।