প্রচ্ছদ অনুসন্ধান ইন্টারনেটে আপত্তিকর কন্টেন্টের নিশানায় নারী রাজনীতিকরা

ইন্টারনেটে আপত্তিকর কন্টেন্টের নিশানায় নারী রাজনীতিকরা

লিখেছেন sumaiya.pib
68 ভিউ

কয়েক বছর ধরে ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউব, টিকটক-সহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নারীদের নিয়ে আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রচার একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এর প্রবণতা ব্যাপক হারে বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি এর শিকার হওয়াদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন সরকারে থাকা এবং রাজনৈতিক অঙ্গনের নারীরা। গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর আলোচনায় আসা কয়েকজন নারী রাজনীতিককে জড়িয়ে ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ক্রমাগত ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব নারীর নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি, তাদের জড়িয়ে গণমাধ্যমের নামে ছড়ানো ভুয়া ফটোকার্ড, ভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ এডিটেড ছবি, আপত্তিকর ডিপফেইক ভিডিও, কুরুচিপূর্ণ বানোয়াট মন্তব্য যুক্ত করে ছবি, ভিডিও তৈরি-সহ বিভিন্নভাবে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এসব বিষয় বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ব্যবহার করা হচ্ছে মূলধারার বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম ও লোগো সংবলিত নকল ফটোকার্ড

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট দেশের ৫ জন উদীয়মান নারী রাজনীতিক, ১ জন প্রতিষ্ঠিত নারী রাজনীতিক এবং ১ জন নারী উপদেষ্টাকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেটে ছড়ানো ২৭টি আপত্তিকর কন্টেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখেছে; যার সব দাবিই ভুয়া। এসবের বাইরেও উল্লিখিত নারীদের নিয়ে ইন্টারনেটে আপত্তিকর কন্টেন্ট প্রচার হয়ে থাকতে পারে, যা যাচাইয়ের সীমাবদ্ধতার কারণে উঠে আসেনি। বিভিন্ন সময়ে দেশের অন্যান্য তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানও এসব কন্টেন্টকে ভুয়া হিসেবে শনাক্ত করেছে।

এর মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ৫টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ১৮.৫২ শতাংশ। বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানাকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ৬টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ২২.২২ শতাংশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ৫টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ১৮.৫২ শতাংশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুমকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ৭টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ২৫.৯৩ শতাংশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমাকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ২ টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ৭.৪১ শতাংশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীনকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ১টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ৩.৭০ শতাংশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেবকে নিয়ে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ ১টি, যা মোট ভুয়া তথ্যের ৩.৭০ শতাংশ। এর মধ্যে নুসরাত তাবাসসুমকে নিয়ে ইন্টারনেটে ছড়ানো আপত্তিকর কন্টেন্টের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।

ছবি: বাংলাফ্যাক্ট

এছাড়াও ২৭টি আপত্তিকর কন্টেন্টের মধ্যে  ৩টি (রুমিন ফারহানাকে নিয়ে ছড়ানো) কেবল জুলাই অভ্যুত্থানপূর্ব সময়ের; অন্যদের নিয়ে ছড়ানো বাকি সব কন্টেন্টই জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ের।

ছবি: বাংলাফ্যাক্ট

এর বাইরেও উল্লিখিত নারীদের নিয়ে রাজনৈতিক, ধর্মীয়-সহ অন্যান্য বিষয় জড়িয়ে  ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে। তবে এই প্রতিবেদনে শুধু আপত্তিকর কন্টেন্ট বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসব কন্টেন্টের মধ্যে ১১টি ফটোকার্ডকেন্দ্রিক, ১০টি ভিডিওকেন্দ্রিক, ৫টি ছবিকেন্দ্রিক এবং ১টি কন্টেন্ট অডিওকেন্দ্রিক।

ছবি: বাংলাফ্যাক্ট

 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরে আসেন। চারদিনের সফর শেষে ১৬ মার্চ ঢাকা ছাড়েন তিনি। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বিমানবন্দরে গুতেরেসকে বিদায় জানান৷ পরবর্তী সময়ে রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে অ্যান্তোনিও গুতেরেসের চুম্বনের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে৷ তবে যাচাই করে দেখা যায়, ভিডিওটি বাস্তব নয়। মূলত, সেসময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির সহায়তায় ভিডিওটি তৈরি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছিল।

এছাড়াও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ছবি দাবিতে একটি আপত্তিকর ছবি (বর্ণনাযোগ্য নয়) ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তবে যাচাই করে দেখা যায়, আপত্তিকর ছবিটি রিজওয়ানা হাসানের নয়। বরং একটি অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট থেকে ভিন্ন এক নারীর ছবি সংগ্রহ করে প্রযুক্তির সহায়তায় তাতে রিজওয়ানা হাসানের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছিল।

চলতি বছরের এপ্রিলে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের মন্তব্য দাবিতে চ্যানেল২৪-এর ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। ফটোকার্ডটিতে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পর্যটননির্ভর জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব কন্ডোম কারখানায় কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার–সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পরিবেশ উপদেষ্টা’ শীর্ষক লেখা ছিল। তবে যাচাই করে দেখা যায়, রিজওয়ানা হাসান এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং চ্যানেল২৪ও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং চ্যানেল২৪-এর সাব-পেজ চট্টগ্রাম২৪ কর্তৃক প্রকাশিত ভিন্ন একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

চলতি বছরের মার্চের শেষদিকে ‘প্রাকৃতিকভাবে সন্তান জন্ম দিলে জরায়ু ঢিলা হয়ে যায়। উপদেষ্টা ভুক্তভোগীদের বলেন–তিনি নিজেই এর প্রমাণ।’ শীর্ষক শিরোনামে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ছবি যুক্ত করে একাত্তর টিভির লোগো সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটি ভুয়া। আদতে রিজওয়ানা হাসান এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং একাত্তর টিভিও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং একাত্তর টিভির ভিন্ন একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ‘কনডম পচনশীল নয় তাই এর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে মূলধারার জাতীয় দৈনিক কালবেলার ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে যাচাই করে দেখা যায়, রিজওয়ানা হাসান এমন কোনো মন্তব্য করেননি এবং কালবেলাও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং কালবেলার ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

 

রুমিন ফারহানা

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ‘রুমিন ফারহানার সাথে চিত্রনায়ক শাকিব খানের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস করলো ৭১ টিভি’ শীর্ষক দাবিতে একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। যাচাই করে দেখা যায়, একাত্তর টিভি এমন কোনো কন্টেন্ট প্রকাশ করেনি এবং প্রচারিত ছবিটিও আসল নয়। বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় শাকিব খানের ছবির সঙ্গে রুমিন ফারহানার ছবি যুক্ত করে সেসময় আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল৷

গত বছরের অক্টোবরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে রুমিন ফারহানার বিয়ের সাজের একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছিল, তারা দুজন বিয়ে করছেন। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ছবিটি বাস্তব নয়। বরং ভিন্ন যুগলের বিয়ের ছবি সংগ্রহ করে তা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে হাসনাত আবদুল্লাহ এবং রুমিন ফারহানার মুখমণ্ডল বসিয়ে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছিল।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে জামায়াতের এক মাওলানার সঙ্গে রুমিন ফারহানার বিয়ের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে ভিডিওটি যাচাই করে দেখা যায়, সেটি রুমিন ফারহানার বিয়ের কোনো ঘটনার নয়। বরং সেসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নে বন্যার্তদের জন্য দোয়া অনুষ্ঠান এবং ইউনিয়ন পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভার মোনাজাত অংশের একটি ভিডিওকে ওই দাবিতে প্রচার করা হয়েছিল।

গত বছরের এপ্রিলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভিডিও কল শেষে রুমিন ফারহানা নেচে উল্লাস করছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ভিডিওটি বাস্তব নয়। বরং ভিডিওটি ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছিল।

গত বছরের জুনের শেষদিকে রুমিন ফারহানার নাচের দৃশ্য দাবিতে অপর একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। তবে যাচাইয়ে সেটিও আসল নয় বলে প্রমাণিত হয়। মূলত, ভিডিওটি ডিপফেক প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছিল।

গত বছরের মে মাসে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়েতে বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা টিকটক ভিডিও বানাচ্ছেন দাবিতে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ভিডিওটি বাস্তব নয়। বরং এটিও ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি। মূলত ভিডিওটি নাফিসা নুসরাত প্রণমি নামের একজন টিকটক কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের। ডিপফেক প্রযুক্তির সহায়তায় নাফিসা নুসরাত প্রণমির মুখাবয়ব পরিবর্তন করে তাতে রুমিন ফারহানার মুখাবয়ব যোগ করে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

 

তাসনিম জারা

চলতি বছরের মার্চে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদের চুম্বনের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তবে ভিডিওটি যাচাই করে দেখা যায়, সেটি বাস্তব কোনো ভিডিও নয়। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছিল৷

৪ মে গাজীপুর নগরে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার অভিযোগ আসে এবং এই হামলার সময় গাড়িতে থাকা হাসনাত আবদুল্লাহ হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে জানা যায়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘….তে আঘাত পেয়েছেন হাসনাত’-তাসনিম জারা’ শিরোনামে  হাসনাত আবদুল্লাহ ও তাসনিম জারার ছবি যুক্ত করে যমুনা টিভির ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে ফটোকার্ডটি যাচাই করে দেখা যায়, ওই শিরোনামে গণমাধ্যমটি কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। মূলত গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে নিয়মিতভাবে প্রচারিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

মে মাসের শুরুতে তাসনিম জারাকে জড়িয়ে ‘সমাবেশে তাসনিম জারা, আহতরা এখানো কাতরাচ্ছে আর আমি প্রতি রাতে বিছনায় কাতরাই’ শীর্ষক শিরোনামে অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্ট-এর ডিজাইন ও লোগো সংবলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে ফটোকার্ডটি যাচাই করে দেখা যায়, ওই শিরোনামে গণমাধ্যমটি কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। মূলত গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে নিয়মিতভাবে প্রচারিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি তাসনিম জারার ছবি যুক্ত করে ‘রমজানে সহবাসের নিয়ম’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠের লোগো সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ওই শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে জনকণ্ঠের ভিন্ন একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম পরিবর্তন করে এ ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

চলতি বছরের মার্চের শুরুর দিকে ফেসবুকে তাসনিম জারার ইউটিউব ভিডিও-এর ‘লিঙ্গ বড় এবং মোটা করবেন কিভাবে? সমাধান’ শীর্ষক থাম্বনেল দাবিতে একটি স্ক্রিনশট প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘আপনাদের স্বাস্থ্য আপা | যার যার মোটা করতে ইচ্ছুক আপার সাথে যোগাযোগ করেন।’ তবে বিষয়টি যাচাই করে দেখা যায়, ওই থাম্বনেলটি আসল নয় বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন একটি থাম্বনেল সম্পাদনা করে আলোচিত থাম্বনেলের স্ক্রিনশটটি তৈরি করে সেসময় ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছিল।

 

নুসরাত তাবাসসুম

চলতি বছরের শুরুতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম-এর নামে একটি আপত্তিকর ভিডিও ‘সমন্বয়ক নুসরাতের গোপন ভিডিও ফাঁস’ শীর্ষক দাবিতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তবে যাচাইয়ে দেখা যায়, দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট থেকে একটি পুরোনো ভিডিও সংগ্রহ করে সেখানে নুসরাত তাবাসসুমের ছবি যুক্ত করে ভিডিওটি তাঁর বলে প্রচার করা হয়েছিল।

প্রায় একই সময়ে নুসরাত তাবাসসুমের একটি এডিটেড ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় নেটিজেনরা ছবিটিকে তাঁর বাস্তব ছবি ভেবে সমালোচনা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও করতে দেখা যায়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে নুসরাত তাবাসসুমের বসে থাকার একটি ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছিল।

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে নুসরাত তাবাসসুমের নাচের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে যাচাই করে দেখা যায়, নাচের ভিডিওটি নুসরাত তাবাসসুমের নয়। প্রকৃতপক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রিয়াঙ্কা দাস নামের এক কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের নাচের ভিডিওকে নুসরাত তাবাসসুমের নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছিল।

প্রায় একই সময়ে ‘মধ্যরাতে টিএসসি এলাকায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনের লোগো সংবলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ওই শিরোনামে যমুনা টিভি বা অন্য কোনো গণমাধ্যম কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি এবং সেসময় টিএসসিতে এমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে যমুনা টিভির ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি নুসরাত তাবাসসুমকে নিয়ে ‘সমন্বয়ক নুসরাতের … ধরায় সহ-সমন্বয়ক শোকজ’ শীর্ষক শিরোনামে জুম বাংলার লোগো সংবলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে প্রচার করা হয়। তবে যাচাই করে দেখা যায়, জুমবাংলা এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বরে জুম বাংলার ফেসবুক পেজে প্রচারিত ভিন্ন একটি ফটোকার্ডের শিরোনাম পরিবর্তন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নারীদের প্রয়োজন ও সচেতনতা বৃদ্ধির কথা ভেবে অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পণ্য ব্র্যান্ড ‘স্টে-সেফ’ স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদর্শন করা হয়। স্যানিটারি ন্যাপকিনকে গোপন পণ্য বলে আখ্যা দিয়ে এর প্রকাশ্য প্রদর্শনী বা বিক্রি বন্ধে দাবি ওঠে৷ এই আপত্তির ভিত্তিতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান প্রদর্শনী ও বিক্রি বন্ধ করে অন্য কোনো পণ্য সেখানে উপস্থিত করতে প্রাণ-আরএফএলকে বাংলা একাডেমির দেওয়া চিঠি নিয়ে বিতর্ক ওঠে৷ এ প্রসঙ্গে নুসরাত তাবাসসুম বিষয়টির সমালোচনা করে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। ওই পোস্টের স্ক্রিনশট ব্যবহার করে ‘অনলাইনে চলছে নুসরাত তাবাসসুমের জরায়ু অপারেশনের জন্য ফান্ড সংগ্রহ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রথম আলোর লোগো ও ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়৷ তবে যাচাই করে দেখা যায়, প্রথম আলো এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রথম আলোর নাম ও লোগো যুক্ত করে ভুয়া ফটোকার্ডটি তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসময় প্রচার করা হয়েছিল।

গত বছরের ডিসেম্বরে নুসরাত তাবাসসুম ও উমামা ফাতেমার ছবি দাবিতে একটি আপত্তিকর  ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ছবিটি আসল নয়। বরং ইন্টারনেট থেকে ভিন্ন একটি ছবি সংগ্রহ করে তাতে প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদনার মাধ্যমে বাম পাশের মেয়েটির স্থলে উমামা ফাতেমার ছবি এবং ডান পাশের মেয়েটির মুখমণ্ডলে নুসরাত তাবাসসুমের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিটি প্রচার করা হয়েছিল।

 

তাজনূভা জাবীন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীনকে জড়িয়ে সাম্প্রতিক সময়ে গুজব প্রচারের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। ১৬ জুন প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর ফেসবুকে একটি কলরেকর্ড পোস্ট করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে দলের এক নেত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তোলেন।

পরবর্তী সময়ে কলরেকর্ডটি ভাইরাল হলে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নেটিজেনরা। সারোয়ার তুষারের কণ্ঠসদৃশ ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথনরত নারীর পরিচয় নিয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন ওঠে। কেউ কেউ ধারণা করেন, ওই নারী জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যুগ্ম-আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন।

এরই মধ্যে প্রবাসী এক সাংবাদিক বিষয়টি জড়িয়ে তাজনূভা জাবীনের নাম প্রকাশ করে পোস্ট দেন৷ ওই পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে আরও বিতর্ক তৈরি হয়। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে তাজনূভা জাবীনের ছবিসহ থাম্বনেল দিয়ে ইউটিউবে এক নারী সাংবাদিক একটি ভিডিও পোস্ট করেন। এতে কলরেকর্ডটির নারী হিসেবে তাজনূভা জাবীনের নাম ছড়িয়ে পড়ে।

তবে জানা যায়, আলোচিত কলরেকর্ডের নারীটি তাজনূভা জাবীন নন। কলরেকর্ডটির সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই জানিয়ে  তিনি নিজের ভেরিফয়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একাধিকবার পোস্ট করেন। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, আলোচিত কলরেকর্ডের ওই নারীর নাম নীলা ইসরাফিল। বিষয়টি নীলা নিজেই এক ফেসবুক পোস্টে নিশ্চিত করেন।

 

উমামা ফাতেমা

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি উমামা ফাতেমাকে জড়িয়ে  ‘জুলাই অভ্যুত্থান শুধু সমন্বয়কদের বিয়ে করার জন্য হয়নি। সবাই বিয়ে করে ফেলছে অথচ আমার চিন্তা কেউ করে না: সমন্বয়ক উমামা’ শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠের ডিজাইন সংবলিত একটি ফটোকার্ডে  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ওই শিরোনামে জনকণ্ঠ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং উমামা ফাতেমাও এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে জনকণ্ঠের ভিন্ন একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে শিরোনাম পরিবর্তন করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছিল।

গত বছরের ডিসেম্বরে উমামা ফাতেমা ও নুসরাত তাবাসসুমের ছবি দাবিতে একটি আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়। ছবিতে দেখা যায়, একটি গলির একপাশে উমামা ফাতেমা এবং অন্যপাশে নুসরাত তাবাসসুম দাঁড়িয়ে আছেন। তবে যাচাই করে দেখা যায়, ছবিটি আসল নয়। বরং ইন্টারনেট থেকে ভিন্ন একটি ছবি সংগ্রহ করে তাতে প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পাদনার মাধ্যমে বামপাশের মেয়েটির স্থলে উমামা ফাতেমার ছবি এবং ডানপাশের মেয়েটির মুখমণ্ডলে নুসরাত তাবাসসুমের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিটি প্রচার করা হয়েছিল।

 

অর্পিতা শ্যামা দেব

চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘২৪ এর লাল যোদ্ধা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট এর মুখ্য সংগঠক অর্পিতা শ্যামা দেব কট’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ব্যক্তিগত দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়, দৃশ্যটি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেবের। ভিডিওটি যাচাই করে দেখা যায়, ওই ভিডিওর নারী অর্পিতা শ্যামা দেব নন। বরং ইন্টারনেটের একটি অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইটে বিদ্যমান ভিন্ন এক নারীর ভিডিওকে অর্পিতা শ্যামা দেবের আপত্তিকর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

 

উপরিউক্ত ঘটনার বাইরেও রাজনৈতিক অঙ্গনের অন্য নারীদের নিয়েও নিয়মিত গুজব প্রচার হতে দেখেছে বাংলাফ্যাক্ট। তাছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া অভিনেত্রী, মডেল, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও অন্য শ্রেণি-পেশার নারীদের নিয়েও অপতথ্য প্রচারের প্রবাহ থামছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়ামীপন্থি কতিপয় পেজ, অ্যাকাউন্ট ও গ্রুপের মাধ্যমে এসব ভুয়া তথ্য সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে।

আপনি আরও পছন্দ করতে পারেন

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। ‘বাংলাফ্যাক্ট’ পিআইবি’র ফ্যাক্টচেক, মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস টিম, যারা নিয়মিত ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করে সত্য তুলে ধরে এবং গণমাধ্যম ও সংবাদ নিয়ে গবেষণা করে।

আমাদের ঠিকানা

৩, সার্কিট হাউজ রোড, ঢাকা ১০০০ 

কপিরাইট © বাংলাফ্যাক্ট 

এই ওয়েবসাইটে কুকি ব্যবহার করা হয়, যাতে আপনার ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করা যায়। আপনার সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে, তবে আপনি চাইলে এটি ব্যবহার না করেও ব্রাউজ করতে পারেন। অনুমোদন দিন বিস্তারিত দেখুন