| ফ্যাক্ট চেক | রাজনীতি
২০২৪ সালের ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার ভাষণ দাবি করে ছড়ানো ভিডিওটি পুরোনো
১৩ আগস্ট ২০২৫
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেদিন শেখ হাসিনার ভাষণের সরাসরি সম্প্রচারের ভিডিও দাবি করে একটি ভিডিও সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘৫ আগস্ট আমি কি ইচ্ছ করে পালিয়ে গিয়েছিলাম। না কি আমাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি মনে করি এই সত্যটা আপনাদের সকলের জানা প্রয়োজন। সত্যটা আসলে জানেন কি, ৫ আগস্ট যদি আমি দেশ ত্যাগ না করাতাম ছাত্র-জনতা যদি সত্যিই গণভবনে প্রবেশ করতে পারতো। আর সেখানে যদি আমি অবস্থান করতাম, আজ আপনাদের সামনে যে আমি সেটাও হয়েতো সম্ভব হতোনা…।’
বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাষণের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের ২৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়া শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার নেন। সেই সাক্ষাতকারের ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন এবং ভিন্ন অডিও যুক্ত করে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা’র ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভিডিওতে একই দৃশ্য পাওয়া যায়। তবে এই ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর অডিও এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের মিল পাওয়া যায়নি।
এ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে পার্টনারশীপের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের ২৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। এর পরদিন ২৯ এপ্রিল ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়া শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার নেন। সেই সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, র্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, রোহিঙ্গা সংকট, বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক সম্পর্ক এবং সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন নিয়ে কথা বলেন।
তাছাড়া, দ্যা ডেইলি স্টারে গত ২৭ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে টেলিভিশনে প্রচারের জন্য শেখ হাসিনা তার একটি ভাষণ রের্কড করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে সামরিক কর্মকর্তারা অপারগতা প্রকাশ করেন।
অর্থাৎ, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার দিন শেখ হাসিনার ভাষণের সরাসরি সম্প্রচারের ভিডিও দাবি করে ইন্টারনেটে ২০২৩ সালের ভিন্ন একটি ভিডিও সম্পাদনা করে ছড়ানো হয়েছে; যা মিথ্যা।
Topics:
হাসিনা-পুতিনের বৈঠকের ভিডিওটি ২০১৩ সালের
ফটোকার্ড নকল করে ঢাকায় নিযুক্ত বর্তমান জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার
এনসিপি নেত্রী মাহমুদা মিতুকে জড়িয়ে কালের কণ্ঠের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার
একাত্তর টিভির ফটোকার্ড নকল করে
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার
বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ঘটনায় পুরোনো ও এআই-সৃষ্ট দৃশ্যের প্রচার
আপনার মতামত দিন
এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?
এখনো কেউ ভোট দেয়নি। আপনিই প্রথম হোন!
0%
0%
আপনার মতামত শেয়ার করুন:
| মন্তব্য সমূহ:
এখনও কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্যটি করুন!
| আরও পড়ুন
ডাকসুর ভিপি প্রার্থী শামীম হোসেনের ওপর হামলার দাবিটি মিথ্যা, ব্যবহৃত ছবিটি পুরোনো
প্রথম আলো'র নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটি ভুয়া।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদেরা জামায়াতের হাতে নিহত - এ দাবি ভিত্তিহীন
সৌদি আরব কর্তৃক শুধুমাত্র বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে প্রচারিত দাবিটি বিভ্রান্তিকর।
ফ্যাক্ট চেক
২০২৪ সালের ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার ভাষণ দাবি করে ছড়ানো ভিডিওটি পুরোনো
১৩ আগস্ট ২০২৫
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেদিন শেখ হাসিনার ভাষণের সরাসরি সম্প্রচারের ভিডিও দাবি করে একটি ভিডিও সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘৫ আগস্ট আমি কি ইচ্ছ করে পালিয়ে গিয়েছিলাম। না কি আমাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি মনে করি এই সত্যটা আপনাদের সকলের জানা প্রয়োজন। সত্যটা আসলে জানেন কি, ৫ আগস্ট যদি আমি দেশ ত্যাগ না করাতাম ছাত্র-জনতা যদি সত্যিই গণভবনে প্রবেশ করতে পারতো। আর সেখানে যদি আমি অবস্থান করতাম, আজ আপনাদের সামনে যে আমি সেটাও হয়েতো সম্ভব হতোনা…।’
বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাষণের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের ২৯ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়া শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার নেন। সেই সাক্ষাতকারের ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন এবং ভিন্ন অডিও যুক্ত করে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা’র ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ভিডিওতে একই দৃশ্য পাওয়া যায়। তবে এই ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর অডিও এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের মিল পাওয়া যায়নি।
এ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে পার্টনারশীপের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের ২৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। এর পরদিন ২৯ এপ্রিল ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার সাংবাদিক শতরূপা বড়ুয়া শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার নেন। সেই সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, র্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, রোহিঙ্গা সংকট, বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক সম্পর্ক এবং সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন নিয়ে কথা বলেন।
তাছাড়া, দ্যা ডেইলি স্টারে গত ২৭ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে টেলিভিশনে প্রচারের জন্য শেখ হাসিনা তার একটি ভাষণ রের্কড করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে সামরিক কর্মকর্তারা অপারগতা প্রকাশ করেন।
অর্থাৎ, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার দিন শেখ হাসিনার ভাষণের সরাসরি সম্প্রচারের ভিডিও দাবি করে ইন্টারনেটে ২০২৩ সালের ভিন্ন একটি ভিডিও সম্পাদনা করে ছড়ানো হয়েছে; যা মিথ্যা।