| ফ্যাক্ট চেক

ভিডিওর অস্ত্রটি খেলনা; ব্যক্তি জঙ্গী নয়, শিক্ষক

১৩ এপ্রিল ২০২৫


গুজব

গতকাল ১২ এপ্রিল ২০২৫ অনলাইনে এক মিছিলের ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চালানো গণহত্যা ও আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বের করা হয়েছে এক মিছিল। সে মিছিলের সামনে হেঁটে চলেছেন কালো রাইফেল হাতে, সামরিক পোশাকে, দাঁড়িওয়ালা এক ব্যক্তি। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ওই ব্যক্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন এক সশস্ত্র ইসলামপন্থী দলের সদস্য এবং সে প্রকাশ্যে ঢাকার রাস্তায় অবৈধ অস্ত্র হাতে মিছিল করছে। তাকে আটকানো বা ঠেকানো হচ্ছে না, কারণ বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদের বাদের পৃষ্ঠপোষক। তবে, বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান বলছে, দাবিটি সত্য নয়। ব্যক্তিটি একজন শিক্ষক যিনি খেলনা বন্দুক হাতে প্রতীকী সেনার পোশাকে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন অন্যদের উৎসাহ দিতে, দৃষ্টি আকর্ষণ করতে।

গতকাল ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ নামের এক সংগঠন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ নামের এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। তাতে বহু রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে ‘আল কোরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ও অংশ নেয়। সংগঠনটির কর্মকর্তা ও কর্মীরা মিছিল করে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। মিছিলে আল কোরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পরিচালক মাঞ্জুর বিন মোস্তফা খেলনা বন্দুক হাতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মতো দেখতে পোশাক পরে মিছিলে অংশ নেন। এভাবে মিছিল উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাঞ্জুর বিন মোস্তফা আজ ১৩ এপ্রিল বাংলাফ্যাক্টকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি জানাতে প্রতীকী পোশাক পরে উপস্থিত হয়েছি। খেলনা বন্দুক ও গায়ে থাকা পোশাকটি কচুক্ষেত বাজার থেকে কিনেছিলাম।’

মিছিলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি বাংলাফ্যাক্টকে নিশ্চিত করেছেন। পুরাতন বাণিজ্য মেলা ঈদগাহের ইমাম গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমি উপস্থিত ছিলাম, ওটা খেলনা বন্দুক ছিল।’ খেলনা বন্দুক থাকার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন ঢাকার এক মাদ্রাসাশিক্ষক মাহফুজুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘তাঁর পোশাকটাও নির্দিষ্ট কোন বাহিনীর পোশাক ছিল না। আর হাতের বন্দুকটিও ছিল খেলনা।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে দাবি করেন, ওই মিছিলে অস্ত্র সজ্জিত হয়ে ‘আর্মড মিলিট্যান্ট’ বা সশস্ত্র জঙ্গিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তাই বলা চলে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের দাবিটি ভুল।

উল্লেখ্য, আল কোরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় আল হেলাল হাসপাতালের পশ্চিম পাশে সাত তারা মসজিদের পাশে অবস্থিত। সংগঠনটি জানিয়েছে, শিক্ষার্থী, আলেম, হাফেজ ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের কোরআন প্রশিক্ষণ দেওয়াই তার প্রধান কার্যক্রম।

আপনার মতামত দিন

এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?

আপনার মতামত শেয়ার করুন:




ফ্যাক্ট চেক

ভিডিওর অস্ত্রটি খেলনা; ব্যক্তি জঙ্গী নয়, শিক্ষক

১৩ এপ্রিল ২০২৫

ভিডিওর অস্ত্রটি খেলনা; ব্যক্তি জঙ্গী নয়, শিক্ষক

গতকাল ১২ এপ্রিল ২০২৫ অনলাইনে এক মিছিলের ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চালানো গণহত্যা ও আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বের করা হয়েছে এক মিছিল। সে মিছিলের সামনে হেঁটে চলেছেন কালো রাইফেল হাতে, সামরিক পোশাকে, দাঁড়িওয়ালা এক ব্যক্তি। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ওই ব্যক্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন এক সশস্ত্র ইসলামপন্থী দলের সদস্য এবং সে প্রকাশ্যে ঢাকার রাস্তায় অবৈধ অস্ত্র হাতে মিছিল করছে। তাকে আটকানো বা ঠেকানো হচ্ছে না, কারণ বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদের বাদের পৃষ্ঠপোষক। তবে, বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান বলছে, দাবিটি সত্য নয়। ব্যক্তিটি একজন শিক্ষক যিনি খেলনা বন্দুক হাতে প্রতীকী সেনার পোশাকে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন অন্যদের উৎসাহ দিতে, দৃষ্টি আকর্ষণ করতে।

গতকাল ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ নামের এক সংগঠন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ নামের এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। তাতে বহু রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে ‘আল কোরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ও অংশ নেয়। সংগঠনটির কর্মকর্তা ও কর্মীরা মিছিল করে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। মিছিলে আল কোরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের পরিচালক মাঞ্জুর বিন মোস্তফা খেলনা বন্দুক হাতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মতো দেখতে পোশাক পরে মিছিলে অংশ নেন। এভাবে মিছিল উপস্থিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাঞ্জুর বিন মোস্তফা আজ ১৩ এপ্রিল বাংলাফ্যাক্টকে বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি জানাতে প্রতীকী পোশাক পরে উপস্থিত হয়েছি। খেলনা বন্দুক ও গায়ে থাকা পোশাকটি কচুক্ষেত বাজার থেকে কিনেছিলাম।’

মিছিলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি বাংলাফ্যাক্টকে নিশ্চিত করেছেন। পুরাতন বাণিজ্য মেলা ঈদগাহের ইমাম গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমি উপস্থিত ছিলাম, ওটা খেলনা বন্দুক ছিল।’ খেলনা বন্দুক থাকার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন ঢাকার এক মাদ্রাসাশিক্ষক মাহফুজুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘তাঁর পোশাকটাও নির্দিষ্ট কোন বাহিনীর পোশাক ছিল না। আর হাতের বন্দুকটিও ছিল খেলনা।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে দাবি করেন, ওই মিছিলে অস্ত্র সজ্জিত হয়ে ‘আর্মড মিলিট্যান্ট’ বা সশস্ত্র জঙ্গিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তাই বলা চলে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের দাবিটি ভুল।

উল্লেখ্য, আল কোরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় আল হেলাল হাসপাতালের পশ্চিম পাশে সাত তারা মসজিদের পাশে অবস্থিত। সংগঠনটি জানিয়েছে, শিক্ষার্থী, আলেম, হাফেজ ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের কোরআন প্রশিক্ষণ দেওয়াই তার প্রধান কার্যক্রম।