| অনুসন্ধান
হত্যার কারণ সাম্প্রদায়িক কলহ নয়, অন্য কিছু
১৯ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিষয়ে নতুন করে অভিযোগ হাজির করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। গত ১২ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনর পক্ষ থেকে এ দাবী করা হয়েছে। তাদের ভাষ্য মতে এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে “সংখ্যালঘু-আদিবাসীদের টার্গেট করে” মোট ৯২টি সহিংসতার ঘটনায় ১১জন নিহত হয়েছেন।
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট-এর অনুসন্ধানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের “টর্গেট” করে হামলার বিষয়বস্তু করার কিংবা সাম্প্রদায়িক হিংসার কারণে ভুক্তভোগীরা সহিংসতার শিকার হয়েছেন, এমন নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলেনি।
ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ বাংলাফ্যাক্টকে ৩৯ পৃষ্ঠার “সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তথ্যচিত্র: জানুয়ারি ২০২৫” এবং ৪২ পৃষ্ঠার “সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তথ্যচিত্র: ফেব্রুয়ারি ২০২৫” সরবরাহ করেন। এ দুটি প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু ব্যক্তি ভুক্তভোগী হয়েছেন এমন বিভিন্ন সহিংসতা, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদির সংবাদ গড়পড়তাভাবে যুক্ত করা হয়েছে। সেসব সংবাদেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
প্রতিবেদনগুলোর তথ্যসূত্র, সম্পর্কিত বিভিন্ন সংবাদ, নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনদের বক্তব্য ও সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ থেকে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডগুলো সম্পর্কে এখানে আলোকপাত করা হলো।
১. ঝালকাঠিতে সুদেব হালদার (২৮) নামের এক মোবাইল ব্যবসায়ীকে ৭ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে রাত ১১টারর দিকে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত সুদেব হালদারের বড় ভাই সুকেশ হালদার দৈনিক কালের কণ্ঠকে জানান, সম্প্রতি মোবাইল ফোন সার্ভিসিং নিয়ে কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়া হয় সুদেবের। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণে সুদেবকে হত্যা করা হতে পারে। ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বাংলাফ্যাক্টকে বলেছেন, এ ব্যাপারে তাঁদের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলেননি তিনি, তবে নিশ্চিত করেছেন যে, এ খুনের পেছনে কোনো সাম্প্রদায়িক কারণ থাকার সম্ভাবনা নেই।
২. ১০ জানুয়ারি ২০২৫ নেত্রকোনায় দীলিপ কুমার রায় (৭১) নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে নিজ ঘরে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর স্বজনেরা দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, কিভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। তবে তাঁদের ধারণা, দুর্বৃত্তরা চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহেদ আলী পাঠান বলেন, তদন্তের কাজ শেষ এখনো হয়নি। তবে তাঁরা দুজনকে সন্দেহ করছেন। চুরি বা ডাকাতি চেষ্টা দেখে ফেলায় দীলিপ কুমারকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁর ধারণা। এর সাথে সাম্প্রদায়িকতার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও তাঁর মত।
৩. নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় অনয় চন্দ্র মোদক (১৩) নামের এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয় গত ১৪ জানুয়ারি। পরে পরিচয় গোপন করে তাঁর বাবা-মাকে ফোন দিয়ে জানানো হয় তাদের ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। আরও বলা হয়, ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে ছেলেকে ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু মুক্তিপণ দেওয়ার একদিন পর ১৯ জানুয়ারি বিকালে আড়িয়াল খাঁ নদীতে ভেসে ওঠে অনয়ের দেহ। বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, অপহরণ-খুনের ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সম্পর্ক নেই। অনয় চন্দ্র নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন পর আড়িয়াল খাঁ নদীতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
৪. গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকার (২৬) অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন। দৈনিক প্রথম আলো প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানায়, রাতে খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা এলাকার তেঁতুলতলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে হেলান দিয়ে চা খাচ্ছিলেন অর্ণব। এ সময় দুর্বৃত্তরা কয়েকটি মোটরসাইকেলে চেপে ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. কুতুব উদ্দিন বাংলাফ্যাক্টকে বলেন, “সাম্প্রদায়িক কোনো কারণে অর্ণব খুন হননি। মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অর্ণব সরকারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ইতিমধ্যে নয়জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “খুলনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু ও কালা লাবলু-পলাশ গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত অর্ণব কালা লাবলু-পলাশের বন্ধু ছিলেন।”
৫. নাটোরে সুকুমার নামের এক রিকসাভ্যান চালককে গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ লালপুর উপজেলায় পথের ধারে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, সে সময় তাঁর গলা কাটা ছিল কিন্তু তিনি ব্যাটারিচালিত যে রিকসাভ্যানটি চালাতেন সেটির হদিস মেলেনি। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান বাংলাফ্যাক্টকে বলেন, রিকসা চুরির উদ্দেশ্যে সুকুমার রায়কে হত্যা করা হয় বলে তাঁদের ধারণা। অর্থাৎ হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনাটির সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক বিরোধ বা হিংসার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই।
৬. এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের নাজিরপুরে লক্ষ্মী রানী ভক্ত (৭৫) নামের সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধাকে তাঁর বাড়ির শোবার ঘরে মৃতাবস্থায় পাওয়া যায়। সে সময় তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। যে ঘরে তাঁকে পাওয়া যায়, তাতে সিঁধ কাটা ছিল বলে জানান তাঁর এক প্রতিবেশী। লক্ষ্মী রানীর ছেলে আইনজীবী তাপস কুমার ভক্ত তাঁর মায়ের মৃত্যুর ব্যাপারে দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় এক পরিবারের সঙ্গে তাদের জমিজমা সংক্রান্ত পুরানা বিরোধ আছে। এর জের ধরে তাঁর মাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তাপস ভক্তের ধারণা। নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, কোনো পূর্বশত্রুতার জের ধরে হত্যার ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে, তবে তারা এর সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক কলহের যোগ পাননি। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
৭. গত ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের বাসাইলে অভিজিৎ কুমার (২৬) নামের এক যুবককে সড়কের পাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, অভিজিতের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে এবং মারা যাওয়ার আগে চার-পাঁচদিন ধরে তিনি বাসাইলে থাকছিলেন। অভিজিৎ কিছুটা মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ছিলেন বলেও এলাকাবাসীর বরাতে জানান জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত হয়, তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো পুলিশের হাতে পৌঁছায়নি বলে জানান ওসি জালাল উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী মৃতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান বাসাইল থানার ওসি জালাল উদ্দিন। কাজিপুর থানার ওসি নূরে আলম বলেন, মৃত্যুর সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক বিরোধের সম্পর্ক আছে এমন কোনো অভিযোগ অভিজিতের পরিবারও করেনি।
৮. পলাশ (১৮) নামের এক অটোরিকসা চালককে মৃতাবস্থায় পাওয়া যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ১৫ ফেব্রুয়ারিতে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন জানান, পলাশের দুই বন্ধু টাকার জন্য তাঁকে খুন করেছে। সন্দেহভাজনদের আটকও করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত কাজ শেষ করেছে, এবং হত্যার পেছনে কোনো সাম্প্রদায়িক কারণ নেই।
৯. রাজধানীর দক্ষিণখানে দিনে দুপুরে সুমন কুমার পাল (৪০) নামের এক বিকাশ এজেন্টকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাইফুর রহমান বাংলাফ্যাক্টকে জানান, ইতোমধ্যে দু সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁর ধারণা, সুমনের বিকাশের দোকান থেকে টাকাপয়সা লুট করার উদ্দেশ্যেই হামলাটি হয়েছিল। এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক বিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই।
১০. গত ১১ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে এক বাসা থেকে উৎপল রায় (৬২) নামের এক বৃদ্ধের গলাকাটা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের ছেলে উজ্জ্বল রায় দৈনিক কালের কণ্ঠকে জানান, আলমারি থেকে তাঁর মায়ের রেখে যাওয়া প্রায় ১৫ ভরি সোনার গয়না এবং প্রায় এক লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ থেকে বোঝা যায়, এটি একটি ডাকাতির ঘটনা ছিল। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জালালুদ্দীন বাংলাফ্যাক্টকে জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তি অত্যন্ত সাধারণ একজন মানুষ ছিলেন, টাকাপয়সা লুট করতে গিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই।
১১. দিলীপ দাস (৪৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে ৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের ফুফাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, “দিলীপ দাস প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে ব্যাগে করে টাকা ও প্রায় ২০ ভরি সোনা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু দোকানের সামনেই পেছন থেকে ডাকাতদলের সদস্যরা ব্যাগ ধরে টান দেয়। দিলীপ পেছনে ঘুরলে হামলাকারীরা চাপাতি দিয়ে তাঁর মুখে, বুকেসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ব্যাগটি নিয়ে একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে চেপে পালিয়ে যায়।” এটা ডাকাতির ঘটনা, এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হিংসার সম্পর্ক এখনো অনুপস্থিতি।
উল্লেখ্য যে, প্রতিবেদনগুলোয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ১০টি হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ আছে। এই হত্যাকাণ্ডটি মার্চে সংঘটিত হলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এটিকে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ দিলীপ দাসের হত্যাসহ মোট ১১টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতাজনিত হত্যার দাবী করা হয়েছে।
পুলিশের অপরাধবিষয়ক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে ২৯৪ এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ৩০০টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, এর মধ্যে ঐক্য পরিষদ তাদের প্রতিবেদনে ঢালাওভাবে ১১জন হিন্দু ভুক্তভোগীদের সংবাদ উপস্থাপন করেছে। অর্থাৎ ভুক্তভোগীর ধর্মীয় পরিচয়কেই তারা “সাম্প্রদায়িক সহিংসতা” হিসেবে দেখাতে চেয়েছে, হত্যাকাণ্ডগুলোর পেছন কারণ বিশ্লেষণ করেনি। সর্বোপরি বলা যায়, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ “সাম্প্রদায়িক সহিংসতা” হিসেবে যে হত্যার ঘটনাগুলোকে দেখাতে চেয়েছে, বাস্তবে সেগুলোর পেছনে কোনো সাম্প্রদায়িক কারণ পাওয়া যায়নি। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে “সাম্প্রদায়িক নৃশংসতা”র অংশ হিসেবে নয় জন হিন্দু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন মর্মে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অভিযোগ তুলেছিল, সুইডেন-ভিত্তিক অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজের অনুসন্ধান করে দেখিয়েছে, ওই দাবীরও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত দিন
এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?
আপনার মতামত শেয়ার করুন:

অনুসন্ধান
হত্যার কারণ সাম্প্রদায়িক কলহ নয়, অন্য কিছু
১৯ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিষয়ে নতুন করে অভিযোগ হাজির করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। গত ১২ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনর পক্ষ থেকে এ দাবী করা হয়েছে। তাদের ভাষ্য মতে এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে “সংখ্যালঘু-আদিবাসীদের টার্গেট করে” মোট ৯২টি সহিংসতার ঘটনায় ১১জন নিহত হয়েছেন।
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট-এর অনুসন্ধানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের “টর্গেট” করে হামলার বিষয়বস্তু করার কিংবা সাম্প্রদায়িক হিংসার কারণে ভুক্তভোগীরা সহিংসতার শিকার হয়েছেন, এমন নির্ভরযোগ্য তথ্য মেলেনি।
ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ বাংলাফ্যাক্টকে ৩৯ পৃষ্ঠার “সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তথ্যচিত্র: জানুয়ারি ২০২৫” এবং ৪২ পৃষ্ঠার “সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তথ্যচিত্র: ফেব্রুয়ারি ২০২৫” সরবরাহ করেন। এ দুটি প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু ব্যক্তি ভুক্তভোগী হয়েছেন এমন বিভিন্ন সহিংসতা, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদির সংবাদ গড়পড়তাভাবে যুক্ত করা হয়েছে। সেসব সংবাদেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
প্রতিবেদনগুলোর তথ্যসূত্র, সম্পর্কিত বিভিন্ন সংবাদ, নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনদের বক্তব্য ও সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ থেকে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডগুলো সম্পর্কে এখানে আলোকপাত করা হলো।
১. ঝালকাঠিতে সুদেব হালদার (২৮) নামের এক মোবাইল ব্যবসায়ীকে ৭ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে রাত ১১টারর দিকে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত সুদেব হালদারের বড় ভাই সুকেশ হালদার দৈনিক কালের কণ্ঠকে জানান, সম্প্রতি মোবাইল ফোন সার্ভিসিং নিয়ে কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়া হয় সুদেবের। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণে সুদেবকে হত্যা করা হতে পারে। ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বাংলাফ্যাক্টকে বলেছেন, এ ব্যাপারে তাঁদের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলেননি তিনি, তবে নিশ্চিত করেছেন যে, এ খুনের পেছনে কোনো সাম্প্রদায়িক কারণ থাকার সম্ভাবনা নেই।
২. ১০ জানুয়ারি ২০২৫ নেত্রকোনায় দীলিপ কুমার রায় (৭১) নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে নিজ ঘরে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর স্বজনেরা দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, কিভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। তবে তাঁদের ধারণা, দুর্বৃত্তরা চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহেদ আলী পাঠান বলেন, তদন্তের কাজ শেষ এখনো হয়নি। তবে তাঁরা দুজনকে সন্দেহ করছেন। চুরি বা ডাকাতি চেষ্টা দেখে ফেলায় দীলিপ কুমারকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁর ধারণা। এর সাথে সাম্প্রদায়িকতার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও তাঁর মত।
৩. নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় অনয় চন্দ্র মোদক (১৩) নামের এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয় গত ১৪ জানুয়ারি। পরে পরিচয় গোপন করে তাঁর বাবা-মাকে ফোন দিয়ে জানানো হয় তাদের ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। আরও বলা হয়, ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে ছেলেকে ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু মুক্তিপণ দেওয়ার একদিন পর ১৯ জানুয়ারি বিকালে আড়িয়াল খাঁ নদীতে ভেসে ওঠে অনয়ের দেহ। বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, অপহরণ-খুনের ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সম্পর্ক নেই। অনয় চন্দ্র নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ দিন পর আড়িয়াল খাঁ নদীতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
৪. গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকার (২৬) অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন। দৈনিক প্রথম আলো প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানায়, রাতে খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা এলাকার তেঁতুলতলা মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে হেলান দিয়ে চা খাচ্ছিলেন অর্ণব। এ সময় দুর্বৃত্তরা কয়েকটি মোটরসাইকেলে চেপে ঘটনাস্থলে এসে তাঁকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. কুতুব উদ্দিন বাংলাফ্যাক্টকে বলেন, “সাম্প্রদায়িক কোনো কারণে অর্ণব খুন হননি। মূলত এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অর্ণব সরকারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ইতিমধ্যে নয়জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “খুলনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু ও কালা লাবলু-পলাশ গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। নিহত অর্ণব কালা লাবলু-পলাশের বন্ধু ছিলেন।”
৫. নাটোরে সুকুমার নামের এক রিকসাভ্যান চালককে গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ লালপুর উপজেলায় পথের ধারে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, সে সময় তাঁর গলা কাটা ছিল কিন্তু তিনি ব্যাটারিচালিত যে রিকসাভ্যানটি চালাতেন সেটির হদিস মেলেনি। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান বাংলাফ্যাক্টকে বলেন, রিকসা চুরির উদ্দেশ্যে সুকুমার রায়কে হত্যা করা হয় বলে তাঁদের ধারণা। অর্থাৎ হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনাটির সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক বিরোধ বা হিংসার প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই।
৬. এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের নাজিরপুরে লক্ষ্মী রানী ভক্ত (৭৫) নামের সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধাকে তাঁর বাড়ির শোবার ঘরে মৃতাবস্থায় পাওয়া যায়। সে সময় তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। যে ঘরে তাঁকে পাওয়া যায়, তাতে সিঁধ কাটা ছিল বলে জানান তাঁর এক প্রতিবেশী। লক্ষ্মী রানীর ছেলে আইনজীবী তাপস কুমার ভক্ত তাঁর মায়ের মৃত্যুর ব্যাপারে দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় এক পরিবারের সঙ্গে তাদের জমিজমা সংক্রান্ত পুরানা বিরোধ আছে। এর জের ধরে তাঁর মাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তাপস ভক্তের ধারণা। নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদ আল ফরিদ ভূঁইয়া বলেন, কোনো পূর্বশত্রুতার জের ধরে হত্যার ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে, তবে তারা এর সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক কলহের যোগ পাননি। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
৭. গত ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের বাসাইলে অভিজিৎ কুমার (২৬) নামের এক যুবককে সড়কের পাশে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, অভিজিতের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে এবং মারা যাওয়ার আগে চার-পাঁচদিন ধরে তিনি বাসাইলে থাকছিলেন। অভিজিৎ কিছুটা মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ছিলেন বলেও এলাকাবাসীর বরাতে জানান জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত হয়, তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো পুলিশের হাতে পৌঁছায়নি বলে জানান ওসি জালাল উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী মৃতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান বাসাইল থানার ওসি জালাল উদ্দিন। কাজিপুর থানার ওসি নূরে আলম বলেন, মৃত্যুর সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক বিরোধের সম্পর্ক আছে এমন কোনো অভিযোগ অভিজিতের পরিবারও করেনি।
৮. পলাশ (১৮) নামের এক অটোরিকসা চালককে মৃতাবস্থায় পাওয়া যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ১৫ ফেব্রুয়ারিতে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন জানান, পলাশের দুই বন্ধু টাকার জন্য তাঁকে খুন করেছে। সন্দেহভাজনদের আটকও করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত কাজ শেষ করেছে, এবং হত্যার পেছনে কোনো সাম্প্রদায়িক কারণ নেই।
৯. রাজধানীর দক্ষিণখানে দিনে দুপুরে সুমন কুমার পাল (৪০) নামের এক বিকাশ এজেন্টকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাইফুর রহমান বাংলাফ্যাক্টকে জানান, ইতোমধ্যে দু সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁর ধারণা, সুমনের বিকাশের দোকান থেকে টাকাপয়সা লুট করার উদ্দেশ্যেই হামলাটি হয়েছিল। এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক বিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই।
১০. গত ১১ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে এক বাসা থেকে উৎপল রায় (৬২) নামের এক বৃদ্ধের গলাকাটা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের ছেলে উজ্জ্বল রায় দৈনিক কালের কণ্ঠকে জানান, আলমারি থেকে তাঁর মায়ের রেখে যাওয়া প্রায় ১৫ ভরি সোনার গয়না এবং প্রায় এক লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ থেকে বোঝা যায়, এটি একটি ডাকাতির ঘটনা ছিল। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জালালুদ্দীন বাংলাফ্যাক্টকে জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তি অত্যন্ত সাধারণ একজন মানুষ ছিলেন, টাকাপয়সা লুট করতে গিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই।
১১. দিলীপ দাস (৪৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে ৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের ফুফাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, “দিলীপ দাস প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে ব্যাগে করে টাকা ও প্রায় ২০ ভরি সোনা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু দোকানের সামনেই পেছন থেকে ডাকাতদলের সদস্যরা ব্যাগ ধরে টান দেয়। দিলীপ পেছনে ঘুরলে হামলাকারীরা চাপাতি দিয়ে তাঁর মুখে, বুকেসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ব্যাগটি নিয়ে একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে চেপে পালিয়ে যায়।” এটা ডাকাতির ঘটনা, এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হিংসার সম্পর্ক এখনো অনুপস্থিতি।
উল্লেখ্য যে, প্রতিবেদনগুলোয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ১০টি হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ আছে। এই হত্যাকাণ্ডটি মার্চে সংঘটিত হলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এটিকে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ দিলীপ দাসের হত্যাসহ মোট ১১টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতাজনিত হত্যার দাবী করা হয়েছে।
পুলিশের অপরাধবিষয়ক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে ২৯৪ এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ৩০০টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, এর মধ্যে ঐক্য পরিষদ তাদের প্রতিবেদনে ঢালাওভাবে ১১জন হিন্দু ভুক্তভোগীদের সংবাদ উপস্থাপন করেছে। অর্থাৎ ভুক্তভোগীর ধর্মীয় পরিচয়কেই তারা “সাম্প্রদায়িক সহিংসতা” হিসেবে দেখাতে চেয়েছে, হত্যাকাণ্ডগুলোর পেছন কারণ বিশ্লেষণ করেনি। সর্বোপরি বলা যায়, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ “সাম্প্রদায়িক সহিংসতা” হিসেবে যে হত্যার ঘটনাগুলোকে দেখাতে চেয়েছে, বাস্তবে সেগুলোর পেছনে কোনো সাম্প্রদায়িক কারণ পাওয়া যায়নি। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে “সাম্প্রদায়িক নৃশংসতা”র অংশ হিসেবে নয় জন হিন্দু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন মর্মে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অভিযোগ তুলেছিল, সুইডেন-ভিত্তিক অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজের অনুসন্ধান করে দেখিয়েছে, ওই দাবীরও কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।