| ফ্যাক্ট চেক

সিরাজগঞ্জের আন্না রানী দাসের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা নেই

১৪ অক্টোবর ২০২৫


মিথ্যা

গত ১১ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরপাড় থেকে আন্না রানী নামে এক নারী গ্রাম পুলিশের মরদেহ উদ্ধার করে সলঙ্গা থানা পুলিশ।


উক্ত ঘটনাটিকে ‘Voice Of Bangladeshi Hindus’ নামক ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা হিসেবে ছড়ানো হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়,  ‘A 60-year-old Hindu woman, Anna Bala Das, was raped & murdered in Sirajganj, Bangladesh. Her only crime? Being a woman from a minority. Where is the outrage?’


অর্থাৎ বলা হয় ‘তাকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। তাঁর একমাত্র অপরাধ, সে সংখ্যালঘু সমাজের একজন নারী।’


এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক হিসেবে প্রচার হতে দেখা যায়। ফেসবুকে উক্ত ঘটনাটি ‘চারিদিকে শুধু হিন্দুদের হাহাকার। হিন্দুদের এই মৃত্যু মিছিল থামবে কবে..’ ক্যাপশনে প্রচার করা হয়েছে।


বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, সিরাজগঞ্জের আন্না রানী দাসের ঘটনার সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। আন্না দাস এবং তার হত্যাকারী একই ধর্মাবলম্বী। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তের নাম তাপস কুমার দাস। অভিযুক্ত তাপস আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আন্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। 


সমকালের ওয়েবসাইটে গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত ‘অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় গ্রাম পুলিশকে হত্যা’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আন্না রানী হত্যা মামলার প্রধান আসামি তাপস কুমার দাস হত্যার দায় স্বীকার করে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় আন্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন।


প্রতিবেদনটিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক ময়নুল ইসলামের সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আন্না রানী শনিবার ভোরে হাঁটতে বের হন। পার্শ্ববর্তী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুর পাড়ে গেলে একই গ্রামের তাপস কুমার দাস তাঁকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় আন্না চিৎকার করলে তাপস তাঁর গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যান। পুলিশ বিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাপসকে শনাক্ত করে। রোববার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

এছাড়া, যুগান্তরসহ একাধিক গণমাধ্যম এবং উক্ত ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া বিবৃতি থেকেও একই তথ্য জানা যায়।


অর্থাৎ, সিরাজগঞ্জে আন্না রানী হত্যার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা নেই। অতএব আলোচিত দাবিটি মিথ্যা।


তথ্যসূত্র: সমকাল, যুগান্তর, রুপালী বাংলাদশে, বাংলাদশে পুলিশ

আপনার মতামত দিন

এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?

আপনার মতামত শেয়ার করুন:




ফ্যাক্ট চেক

সিরাজগঞ্জের আন্না রানী দাসের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা নেই

১৪ অক্টোবর ২০২৫

সিরাজগঞ্জের আন্না রানী দাসের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা নেই

গত ১১ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরপাড় থেকে আন্না রানী নামে এক নারী গ্রাম পুলিশের মরদেহ উদ্ধার করে সলঙ্গা থানা পুলিশ।


উক্ত ঘটনাটিকে ‘Voice Of Bangladeshi Hindus’ নামক ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা হিসেবে ছড়ানো হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়,  ‘A 60-year-old Hindu woman, Anna Bala Das, was raped & murdered in Sirajganj, Bangladesh. Her only crime? Being a woman from a minority. Where is the outrage?’


অর্থাৎ বলা হয় ‘তাকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। তাঁর একমাত্র অপরাধ, সে সংখ্যালঘু সমাজের একজন নারী।’


এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক হিসেবে প্রচার হতে দেখা যায়। ফেসবুকে উক্ত ঘটনাটি ‘চারিদিকে শুধু হিন্দুদের হাহাকার। হিন্দুদের এই মৃত্যু মিছিল থামবে কবে..’ ক্যাপশনে প্রচার করা হয়েছে।


বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, সিরাজগঞ্জের আন্না রানী দাসের ঘটনার সঙ্গে কোনো সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। আন্না দাস এবং তার হত্যাকারী একই ধর্মাবলম্বী। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তের নাম তাপস কুমার দাস। অভিযুক্ত তাপস আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আন্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। 


সমকালের ওয়েবসাইটে গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত ‘অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় গ্রাম পুলিশকে হত্যা’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আন্না রানী হত্যা মামলার প্রধান আসামি তাপস কুমার দাস হত্যার দায় স্বীকার করে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় আন্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন।


প্রতিবেদনটিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক ময়নুল ইসলামের সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আন্না রানী শনিবার ভোরে হাঁটতে বের হন। পার্শ্ববর্তী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুর পাড়ে গেলে একই গ্রামের তাপস কুমার দাস তাঁকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় আন্না চিৎকার করলে তাপস তাঁর গলা চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যান। পুলিশ বিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাপসকে শনাক্ত করে। রোববার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

এছাড়া, যুগান্তরসহ একাধিক গণমাধ্যম এবং উক্ত ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া বিবৃতি থেকেও একই তথ্য জানা যায়।


অর্থাৎ, সিরাজগঞ্জে আন্না রানী হত্যার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা নেই। অতএব আলোচিত দাবিটি মিথ্যা।


তথ্যসূত্র: সমকাল, যুগান্তর, রুপালী বাংলাদশে, বাংলাদশে পুলিশ