| ফ্যাক্ট চেক

প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পেছানোর ঘোষণা দেননি

১৬ অক্টোবর ২০২৫


মিথ্যা

আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পিছিয়ে এপ্রিলে হবে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছেন দাবি করে টিকটকে একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে। 


তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পিছিয়ে এপ্রিলে হওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। গত ৬ জুন প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রাথমিক তারিখ ঘোষণা করেন। তখন এটি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান আনন্দবাজার পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করে। সেই সংবাদ প্রতিবেদনেরই অংশ এটি।


ভিডিওতে থাকা ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান আনন্দবাজার পত্রিকার লোগোর সূত্রে অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটির ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ জুন প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনে একই দৃশ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানান। তবে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে- এমন তথ্য প্রধান উপদেষ্টার বরাতে উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 


দ্যা ডেইলি স্টারে গত ৬ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। 


তবে দ্যা ডেইলি স্টারে গত ৫ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালে রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে যেন নির্বাচন আয়োজন করা যায় সেজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) চিঠি দেওয়া হবে।


দ্যা ডেইলি স্টারে গত ২৩ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত এবং ভারতের জন্য মনোনীত রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোরের সঙ্গে বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে।


গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) জুলাই সনদ স্বাক্ষরকে সামনে রেখে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।


দ্যা ডেইলি স্টারে গত ১০ মে সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভা শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। 


দৈনিক ইত্তেফাকে গত ৩ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর একটি মন্তব্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে। তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র দাঁড়াতে পারবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে।’


অর্থাৎ, আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পিছিয়ে এপ্রিলে হওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এমন কোনো মন্তব্য করেননি।


তথ্যসূত্র

আপনার মতামত দিন

এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?

আপনার মতামত শেয়ার করুন:




ফ্যাক্ট চেক

প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পেছানোর ঘোষণা দেননি

১৬ অক্টোবর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পেছানোর ঘোষণা দেননি

আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পিছিয়ে এপ্রিলে হবে- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছেন দাবি করে টিকটকে একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে। 


তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পিছিয়ে এপ্রিলে হওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। গত ৬ জুন প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রাথমিক তারিখ ঘোষণা করেন। তখন এটি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান আনন্দবাজার পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করে। সেই সংবাদ প্রতিবেদনেরই অংশ এটি।


ভিডিওতে থাকা ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান আনন্দবাজার পত্রিকার লোগোর সূত্রে অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটির ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ জুন প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনে একই দৃশ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানান। তবে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে- এমন তথ্য প্রধান উপদেষ্টার বরাতে উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 


দ্যা ডেইলি স্টারে গত ৬ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। 


তবে দ্যা ডেইলি স্টারে গত ৫ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালে রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে যেন নির্বাচন আয়োজন করা যায় সেজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) চিঠি দেওয়া হবে।


দ্যা ডেইলি স্টারে গত ২৩ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত এবং ভারতের জন্য মনোনীত রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোরের সঙ্গে বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে।


গতকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) জুলাই সনদ স্বাক্ষরকে সামনে রেখে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।


দ্যা ডেইলি স্টারে গত ১০ মে সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভা শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। 


দৈনিক ইত্তেফাকে গত ৩ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর একটি মন্তব্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে। তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র দাঁড়াতে পারবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে।’


অর্থাৎ, আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন দুই মাস পিছিয়ে এপ্রিলে হওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এমন কোনো মন্তব্য করেননি।


তথ্যসূত্র