| মিডিয়া লিটারেসি
গণমাধ্যমের চোখে দর্শক: মানুষ নাকি পণ্য?
৭ অক্টোবর ২০২৫

গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তার অডিয়েন্স। কিন্তু প্রশ্ন হলো—মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি কি আমাদেরকে মানুষ হিসেবে দেখে, নাকি কেবল ডেটা আর পণ্য হিসেবে ব্যবহার করে?
১. অডিয়েন্স = ডেটা
ডিজিটাল যুগে আমরা প্রতিবার নিউজ পোর্টাল খুলি, ইউটিউব দেখি, কিংবা ফেসবুকে লাইক দিই—আমাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্যগুলো বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বিক্রি হয়। আমরা একদিকে দর্শক, অন্যদিকে ব্যবসার কাঁচামাল।
👉 উদাহরণ: বাংলাদেশে গুগল বা ফেসবুকের বিজ্ঞাপন বাজার ২০২৩ সালে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার উপরে পৌঁছেছে, যেখানে ব্যবহারকারীর ডেটাই মূল সম্পদ।
২. অডিয়েন্স = পণ্য
টেলিভিশন যুগে বলা হতো—“দর্শকরা আসলে বিজ্ঞাপনদাতার কাছে বিক্রি হওয়া পণ্য।” কারণ, বিজ্ঞাপনদাতারা টিভি চ্যানেলের কাছে টাকা দিতেন দর্শকের চোখের সময় কিনতে। আজও একই বিষয় ঘটছে, শুধু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও সূক্ষ্মভাবে।
৩. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ৮০% আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন। ফলে সংবাদে জনস্বার্থ বাদ দিয়ে অনেক সময় বিজ্ঞাপনদাতাদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতেও ক্লিকবেইট শিরোনাম ব্যবহার করা হয় কারণ দর্শকের ক্লিকই হলো বাজারযোগ্য পণ্য।
৪. রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক
মিডিয়া মালিকরা দর্শকের সংখ্যা ব্যবহার করে রাজনৈতিক দল বা কর্পোরেশনের সঙ্গে দর-কষাকষি করে। আবার, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যালগরিদম মানুষকে এমন কনটেন্ট দেখায় যা তাদের বেশি সময় আটকে রাখে—even যদি তা বিভ্রান্তিকর বা ক্ষতিকর হয়। এর ফলে দর্শকরা শুধু ভোক্তা নয়, তারা হয়ে ওঠে জনমত নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র।
অডিয়েন্সকে যদি কেবল ডেটা ও পণ্য হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ তার স্বাধীনতা হারায়। তাই মিডিয়া লিটারেসির মাধ্যমে আমাদের জানতে হবে—কীভাবে আমরা “শুধু ভোক্তা” নয়, বরং সচেতন নাগরিক হতে পারি।
পরবর্তী বিষয়:
অনলাইন কনটেন্ট: কী দেখি, কেন দেখি?
ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে
আরও জানুন: মিডিয়া লিটারেসি ▶️ [প্লেলিস্ট লিঙ্ক]
আপনার মতামত দিন
এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?
আপনার মতামত শেয়ার করুন:

মিডিয়া লিটারেসি
গণমাধ্যমের চোখে দর্শক: মানুষ নাকি পণ্য?
৭ অক্টোবর ২০২৫

গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তার অডিয়েন্স। কিন্তু প্রশ্ন হলো—মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি কি আমাদেরকে মানুষ হিসেবে দেখে, নাকি কেবল ডেটা আর পণ্য হিসেবে ব্যবহার করে?
১. অডিয়েন্স = ডেটা
ডিজিটাল যুগে আমরা প্রতিবার নিউজ পোর্টাল খুলি, ইউটিউব দেখি, কিংবা ফেসবুকে লাইক দিই—আমাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্যগুলো বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে বিক্রি হয়। আমরা একদিকে দর্শক, অন্যদিকে ব্যবসার কাঁচামাল।
👉 উদাহরণ: বাংলাদেশে গুগল বা ফেসবুকের বিজ্ঞাপন বাজার ২০২৩ সালে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার উপরে পৌঁছেছে, যেখানে ব্যবহারকারীর ডেটাই মূল সম্পদ।
২. অডিয়েন্স = পণ্য
টেলিভিশন যুগে বলা হতো—“দর্শকরা আসলে বিজ্ঞাপনদাতার কাছে বিক্রি হওয়া পণ্য।” কারণ, বিজ্ঞাপনদাতারা টিভি চ্যানেলের কাছে টাকা দিতেন দর্শকের চোখের সময় কিনতে। আজও একই বিষয় ঘটছে, শুধু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও সূক্ষ্মভাবে।
৩. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ৮০% আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন। ফলে সংবাদে জনস্বার্থ বাদ দিয়ে অনেক সময় বিজ্ঞাপনদাতাদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতেও ক্লিকবেইট শিরোনাম ব্যবহার করা হয় কারণ দর্শকের ক্লিকই হলো বাজারযোগ্য পণ্য।
৪. রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক
মিডিয়া মালিকরা দর্শকের সংখ্যা ব্যবহার করে রাজনৈতিক দল বা কর্পোরেশনের সঙ্গে দর-কষাকষি করে। আবার, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যালগরিদম মানুষকে এমন কনটেন্ট দেখায় যা তাদের বেশি সময় আটকে রাখে—even যদি তা বিভ্রান্তিকর বা ক্ষতিকর হয়। এর ফলে দর্শকরা শুধু ভোক্তা নয়, তারা হয়ে ওঠে জনমত নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র।
অডিয়েন্সকে যদি কেবল ডেটা ও পণ্য হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ তার স্বাধীনতা হারায়। তাই মিডিয়া লিটারেসির মাধ্যমে আমাদের জানতে হবে—কীভাবে আমরা “শুধু ভোক্তা” নয়, বরং সচেতন নাগরিক হতে পারি।
পরবর্তী বিষয়:
অনলাইন কনটেন্ট: কী দেখি, কেন দেখি?
ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে
আরও জানুন: মিডিয়া লিটারেসি ▶️ [প্লেলিস্ট লিঙ্ক]