| মিডিয়া লিটারেসি

গণমাধ্যম ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ: প্রিন্ট থেকে সোশ্যাল মিডিয়া

৭ অক্টোবর ২০২৫



গণমাধ্যমের ইতিহাস শুধু প্রযুক্তির পরিবর্তন নয়, বরং আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতা কিভাবে পাল্টেছে, তা অনেক কিছু বলে। প্রিন্ট মিডিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার অগ্রযাত্রাএটি শুধু একটি প্রযুক্তির পরিবর্তন নয়, এটি জনগণের মতামত, আন্দোলন এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। আজকের ভিডিওতে আমরা জানবোগণমাধ্যমের বিকাশ কিভাবে রাজনৈতিক পরিবর্তন জনমতের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে, বিশেষত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে।

 

. প্রিন্ট মিডিয়া: প্রথম রাজনৈতিক বাহন

 বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাস শুরু হয় প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে। ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে পত্রিকা এবং সংবাদপত্র দেশের রাজনৈতিক চেতনা মুক্তিযুদ্ধের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিল। বিশেষত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংবাদপত্র এবং রেডিও ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রধান মাধ্যম।

 

. রেডিও এবং টেলিভিশন: জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ

১৯৬৪ সালে টেলিভিশন আসার পর, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত করেছে। ১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (BTV) সরকারের পক্ষ থেকে জনগণের কাছে বার্তা পৌঁছানোর প্রধান মাধ্যম ছিল। তবে, যখন ব্যক্তি মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো উত্থিত হলো, গণমাধ্যম আরও বাণিজ্যিক হয়ে উঠল।

 

. ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া: জনগণের ক্ষমতায়ন

২০০০ সালের পর বাংলাদেশে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান গণমাধ্যমের ভূমিকা এবং ক্ষমতা সম্পূর্ণ বদলে দেয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর, ফেসবুক, টুইটার, এবং ইউটিউবের মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল, যার ফলে জনগণের মধ্যে দ্রুত প্রতিবাদ এবং আন্দোলন গড়ে উঠেছিল।

 

. ২০১৪ সালের নির্বাচনী সহিংসতা

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক প্রচারণা ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে দেশে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং গুজবের কারণে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।

 

. ২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলন

২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে একত্রিত করা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে একটি বিপ্লব ঘটায়। ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে #WeWantJustice, #StudentProtests ট্রেন্ড করে, যা আন্দোলনকে আরো ব্যাপক দৃশ্যমান করে তোলে।

 

. ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থান

২০২৪ সালে ছাত্র জনতার মধ্যে ব্যাপক গণ অভ্যুত্থান ঘটে, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। একদিকে যেমন নির্বাচনী সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, অন্যদিকে সরকার বিরোধী আন্দোলনও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গতি পেয়েছিল।

 

এমনভাবে গণমাধ্যম শুধু খবর নয়, বরং রাজনৈতিক আন্দোলন এবং সামাজিক পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে জনগণের সচেতনতা তৈরি করেছে, তা এখন আমাদের কাছে পরিষ্কার।

 

গণমাধ্যমের ইতিহাস শুধু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নয়, বরং এটি জনগণের জীবনে গভীর রাজনৈতিক, সামাজিক অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলে।
 

👉 যদি এই ভিডিওটি আপনাকে নতুন কিছু শিখিয়েছে, তাহলে লাইক, শেয়ার এবং সাবস্ক্রাইব করুন। আর কমেন্টে লিখুনকিভাবে আপনি গণমাধ্যমের প্রভাব অনুভব করেছেন?



পরবর্তী বিষয়:

মিডিয়া অর্থনীতি: বিজ্ঞাপন নির্ভরতা, ক্লিকবেইট ও জনস্বার্থের দ্বন্দ্ব


 

ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে

 

আরও জানুনমিডিয়া লিটারেসি ▶️ [প্লেলিস্ট লিঙ্ক]





আপনার মতামত দিন

এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?

আপনার মতামত শেয়ার করুন:




মিডিয়া লিটারেসি

গণমাধ্যম ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ: প্রিন্ট থেকে সোশ্যাল মিডিয়া

৭ অক্টোবর ২০২৫

গণমাধ্যম ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ: প্রিন্ট থেকে সোশ্যাল মিডিয়া

গণমাধ্যমের ইতিহাস শুধু প্রযুক্তির পরিবর্তন নয়, বরং আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতা কিভাবে পাল্টেছে, তা অনেক কিছু বলে। প্রিন্ট মিডিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার অগ্রযাত্রাএটি শুধু একটি প্রযুক্তির পরিবর্তন নয়, এটি জনগণের মতামত, আন্দোলন এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। আজকের ভিডিওতে আমরা জানবোগণমাধ্যমের বিকাশ কিভাবে রাজনৈতিক পরিবর্তন জনমতের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে, বিশেষত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে।

 

. প্রিন্ট মিডিয়া: প্রথম রাজনৈতিক বাহন

 বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাস শুরু হয় প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে। ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে পত্রিকা এবং সংবাদপত্র দেশের রাজনৈতিক চেতনা মুক্তিযুদ্ধের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিল। বিশেষত ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সংবাদপত্র এবং রেডিও ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রধান মাধ্যম।

 

. রেডিও এবং টেলিভিশন: জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ

১৯৬৪ সালে টেলিভিশন আসার পর, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রভাবকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত করেছে। ১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (BTV) সরকারের পক্ষ থেকে জনগণের কাছে বার্তা পৌঁছানোর প্রধান মাধ্যম ছিল। তবে, যখন ব্যক্তি মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো উত্থিত হলো, গণমাধ্যম আরও বাণিজ্যিক হয়ে উঠল।

 

. ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া: জনগণের ক্ষমতায়ন

২০০০ সালের পর বাংলাদেশে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান গণমাধ্যমের ভূমিকা এবং ক্ষমতা সম্পূর্ণ বদলে দেয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর, ফেসবুক, টুইটার, এবং ইউটিউবের মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল, যার ফলে জনগণের মধ্যে দ্রুত প্রতিবাদ এবং আন্দোলন গড়ে উঠেছিল।

 

. ২০১৪ সালের নির্বাচনী সহিংসতা

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক প্রচারণা ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে দেশে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং গুজবের কারণে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।

 

. ২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলন

২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে একত্রিত করা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে একটি বিপ্লব ঘটায়। ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে #WeWantJustice, #StudentProtests ট্রেন্ড করে, যা আন্দোলনকে আরো ব্যাপক দৃশ্যমান করে তোলে।

 

. ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থান

২০২৪ সালে ছাত্র জনতার মধ্যে ব্যাপক গণ অভ্যুত্থান ঘটে, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। একদিকে যেমন নির্বাচনী সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, অন্যদিকে সরকার বিরোধী আন্দোলনও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গতি পেয়েছিল।

 

এমনভাবে গণমাধ্যম শুধু খবর নয়, বরং রাজনৈতিক আন্দোলন এবং সামাজিক পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে জনগণের সচেতনতা তৈরি করেছে, তা এখন আমাদের কাছে পরিষ্কার।

 

গণমাধ্যমের ইতিহাস শুধু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নয়, বরং এটি জনগণের জীবনে গভীর রাজনৈতিক, সামাজিক অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলে।
 

👉 যদি এই ভিডিওটি আপনাকে নতুন কিছু শিখিয়েছে, তাহলে লাইক, শেয়ার এবং সাবস্ক্রাইব করুন। আর কমেন্টে লিখুনকিভাবে আপনি গণমাধ্যমের প্রভাব অনুভব করেছেন?



পরবর্তী বিষয়:

মিডিয়া অর্থনীতি: বিজ্ঞাপন নির্ভরতা, ক্লিকবেইট ও জনস্বার্থের দ্বন্দ্ব


 

ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে

 

আরও জানুনমিডিয়া লিটারেসি ▶️ [প্লেলিস্ট লিঙ্ক]