| ফ্যাক্ট চেক | রাজনীতি
অন্তর্বর্তী সরকার নয়, রাস্তায় তরুণীকে পুলিশের মারধরের ভিডিওটি আ. লীগ আমলের
২০ আগস্ট ২০২৫
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শাসনামলে পুলিশের দুই সদস্য অল্পবয়সি এক মেয়েকে রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধর করছে বলে দাবি করা একটি ভিডিও সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের পোশাকে দুইজন এবং ট্রাফিক কনস্টেবলের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি এক তরুণীকে রাস্তার ডিভাইডারের পাশে মারধর করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।
বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, তরুণীকে দুই পুলিশ সদস্যের মারধরের ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনামলের তথা সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলিস্তানের অলিম্পিক ভবনের সামনের রাস্তায় দুই পুলিশ সদস্য এবং এক ট্রাফিক কনস্টেবল মিলে ওই তরুণীকে মারধর করেন। এটি সেই ঘটনার দৃশ্য।
আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দৈনিক প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘অল্পবয়সী এক মেয়েকে পুলিশের দুই সদস্য মারধর করছেন প্রকাশ্য রাস্তায়!’
এসব তথ্যসূত্রে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে দৈনিক সমকালের ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৮ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও একই দৃশ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলিস্তানের অলিম্পিক ভবনের সামনের রাস্তায় দুই পুলিশ সদস্য ও এক ট্রাফিক কনস্টেবল একজন তরুণীকে মারধর করেন। তখন সেই দুই পুলিশ সদস্যকে সহায়তা করেন আরেক ট্রাফিক কনস্টেবল। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনা বিষয়ে সমকালকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার তৎকালীন উপকমিশনার মাসুদুর রহমানে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির যাতায়াতের সময় বড় একটি ব্যাগ নিয়ে সড়ক বিভাজনে অবস্থান করছিলেন ওই তরুণী। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু তিনি সরতে না চাওয়ায় জোর করে তাকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তরুণীকে মারধর করা হয়নি।’
ট্রাফিক পুলিশের পূর্ব বিভাগের তৎকালীন উপকমিশনার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘পাগলি টাইপ' মেয়েটি সড়ক বিভাজনে শুয়েছিলেন। সেখানে মূলত পুলিশের প্রো-রক্ষা বিভাগের সদস্যরা ছিলেন, আর ছিলেন ট্রাফিকের একজন কনস্টেবল। তিনি মারধর করেননি।’
অর্থাৎ, ২০১৮ সালে রাজধানীর গুলিস্তানে অলিম্পিক ভবনের সামনে পুলিশ কর্তৃক তরুণীর নিগৃহীত হওয়ার ভিডিওকে সাম্প্রতিক ঘটনার ভিডিও দাবি করে ইন্টারনেটে যে তথ্য ছড়ানো হচ্ছে; তা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র: এখানে, এখানে
Topics:
হাসিনা-পুতিনের বৈঠকের ভিডিওটি ২০১৩ সালের
ফটোকার্ড নকল করে ঢাকায় নিযুক্ত বর্তমান জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার
এনসিপি নেত্রী মাহমুদা মিতুকে জড়িয়ে কালের কণ্ঠের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার
একাত্তর টিভির ফটোকার্ড নকল করে
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার
বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ঘটনায় পুরোনো ও এআই-সৃষ্ট দৃশ্যের প্রচার
আপনার মতামত দিন
এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?
এখনো কেউ ভোট দেয়নি। আপনিই প্রথম হোন!
0%
0%
আপনার মতামত শেয়ার করুন:
| মন্তব্য সমূহ:
এখনও কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্যটি করুন!
| আরও পড়ুন
কক্সবাজারে মার্কিন সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে অপপ্রচার
নাহিদ ইসলামের বাড়ি থেকে ৪ ব্যাগ টাকা উদ্ধারের গুজব
জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনা দাবি করে ছড়ানো ভিডিওটি পুরোনো ভিন্ন ঘটনার
আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের কারণে নয়, সুনামগঞ্জে পুলিশকে জনতা ধাওয়া করে ভিন্ন কারণে
ফ্যাক্ট চেক
অন্তর্বর্তী সরকার নয়, রাস্তায় তরুণীকে পুলিশের মারধরের ভিডিওটি আ. লীগ আমলের
২০ আগস্ট ২০২৫
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শাসনামলে পুলিশের দুই সদস্য অল্পবয়সি এক মেয়েকে রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধর করছে বলে দাবি করা একটি ভিডিও সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের পোশাকে দুইজন এবং ট্রাফিক কনস্টেবলের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি এক তরুণীকে রাস্তার ডিভাইডারের পাশে মারধর করে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।
বাংলাফ্যাক্ট যাচাই করে দেখেছে, তরুণীকে দুই পুলিশ সদস্যের মারধরের ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনামলের তথা সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলিস্তানের অলিম্পিক ভবনের সামনের রাস্তায় দুই পুলিশ সদস্য এবং এক ট্রাফিক কনস্টেবল মিলে ওই তরুণীকে মারধর করেন। এটি সেই ঘটনার দৃশ্য।
আলোচিত ভিডিওটি থেকে কিছু স্থিরচিত্র নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দৈনিক প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘অল্পবয়সী এক মেয়েকে পুলিশের দুই সদস্য মারধর করছেন প্রকাশ্য রাস্তায়!’
এসব তথ্যসূত্রে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে দৈনিক সমকালের ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৮ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও একই দৃশ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গুলিস্তানের অলিম্পিক ভবনের সামনের রাস্তায় দুই পুলিশ সদস্য ও এক ট্রাফিক কনস্টেবল একজন তরুণীকে মারধর করেন। তখন সেই দুই পুলিশ সদস্যকে সহায়তা করেন আরেক ট্রাফিক কনস্টেবল। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনা বিষয়ে সমকালকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার তৎকালীন উপকমিশনার মাসুদুর রহমানে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির যাতায়াতের সময় বড় একটি ব্যাগ নিয়ে সড়ক বিভাজনে অবস্থান করছিলেন ওই তরুণী। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু তিনি সরতে না চাওয়ায় জোর করে তাকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তরুণীকে মারধর করা হয়নি।’
ট্রাফিক পুলিশের পূর্ব বিভাগের তৎকালীন উপকমিশনার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘পাগলি টাইপ' মেয়েটি সড়ক বিভাজনে শুয়েছিলেন। সেখানে মূলত পুলিশের প্রো-রক্ষা বিভাগের সদস্যরা ছিলেন, আর ছিলেন ট্রাফিকের একজন কনস্টেবল। তিনি মারধর করেননি।’
অর্থাৎ, ২০১৮ সালে রাজধানীর গুলিস্তানে অলিম্পিক ভবনের সামনে পুলিশ কর্তৃক তরুণীর নিগৃহীত হওয়ার ভিডিওকে সাম্প্রতিক ঘটনার ভিডিও দাবি করে ইন্টারনেটে যে তথ্য ছড়ানো হচ্ছে; তা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র: এখানে, এখানে