| মিডিয়া লিটারেসি
সংবাদ: অর্থনীতি, চাপ ও নৈতিকতার দ্বন্দ্ব
২৮ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ হলো সমাজের আয়না। কিন্তু এই আয়না সবসময় কি স্বচ্ছ থাকে? গণমাধ্যমের সংবাদ তৈরি হয় একদিকে সাংবাদিকতার আদর্শ ও নৈতিকতার ভিত্তিতে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক নির্ভরতা ও রাজনৈতিক চাপের প্রভাবে।
১. সাংবাদিকতার অর্থনীতি
প্রচলিত গণমাধ্যম যেমন সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল বিজ্ঞাপন নির্ভর। বিজ্ঞাপন রাজস্ব ছাড়া তারা টিকে থাকতে পারে না। এর ফলে অনেক সময় বিজ্ঞাপনদাতাদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সংবাদ নির্বাচন করা হয়।
👉 উদাহরণ: বাংলাদেশে
অনেক টেলিভিশন নাটক বা অনুষ্ঠান
মাঝপথে স্পনসরের কারণে পরিবর্তন বা স্থগিত হয়েছে।
সংবাদও একইভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
২. রাজনৈতিক চাপ
গণতান্ত্রিক সমাজে সংবাদ হওয়া উচিত নিরপেক্ষ। কিন্তু বাস্তবে রাজনৈতিক দলগুলো সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব খাটায়। এর ফলে কিছু সংবাদ প্রচারিত হয় না, কিছু আবার অতিরঞ্জিত হয়।
👉 উদাহরণ: ২০১৪
সালের নির্বাচনের সময় অনেক চ্যানেল
নির্দিষ্ট পক্ষের অবস্থানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে,
আবার ২০১৮ সালের ছাত্র
আন্দোলনের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ
ঘটনাকে আংশিকভাবে প্রচার করেছে।
৩. পক্ষপাত ও নৈতিক দ্বন্দ্ব
সাংবাদিকরা অনেক সময় দ্বিধার মধ্যে থাকেন—সত্য প্রকাশ করবেন, নাকি চাকরি ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ দেখবেন। এর ফলে পক্ষপাত দেখা দেয়। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে জনগণও অনেক সময় সংবাদে পক্ষপাত বুঝে ফেলে, যা আস্থার সংকট তৈরি করে।
৪. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম একদিকে উন্নয়ন, সচেতনতা ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেয়, অন্যদিকে অর্থনীতি ও রাজনৈতিক চাপে স্বাধীনতা হারায়। বিশেষ করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় দেখা গেছে—প্রচলিত মিডিয়া অনেক তথ্য দিতে পারেনি, তাই মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে ঝুঁকেছে।
সংবাদ হলো জনস্বার্থের হাতিয়ার। কিন্তু যখন অর্থনীতি ও রাজনৈতিক চাপ সংবাদকে বিকৃত করে, তখন নৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তাই জনগণের সচেতনতা এবং সাংবাদিকদের সাহসিকতাই সংবাদকে প্রকৃত অর্থে বিশ্বাসযোগ্য রাখতে পারে।
পরবর্তী বিষয়:
গেমস ও প্রতিযোগিতা: গেম কনটেন্টের কাঠামো, সহিংসতা বনাম সৃজনশীলতা, ই-স্পোর্টস সংস্কৃতি।
ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে
আরও জানুন: মিডিয়া লিটারেসি ▶️ [প্লেলিস্ট লিঙ্ক]
আপনার মতামত দিন
এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?
আপনার মতামত শেয়ার করুন:
| আরও পড়ুন
মিডিয়া এফেক্টস: ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি | মিডিয়ার প্রভাব কতটা, কীভাবে এবং কার ওপর?
ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স: অনলাইন ভিডিও, মিউজিক, শপিং ও পাইরেসি—ভোক্তার আচরণ ও শিল্পের পরিবর্তন
সংবাদ: অর্থনীতি, চাপ ও নৈতিকতার দ্বন্দ্ব
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং — ইকো-চেম্বার, ভুয়া প্রোফাইল, প্যারাসোশাল সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ারের ঝুঁকি
মিডিয়া লিটারেসি
সংবাদ: অর্থনীতি, চাপ ও নৈতিকতার দ্বন্দ্ব}
২৮ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদ হলো সমাজের আয়না। কিন্তু এই আয়না সবসময় কি স্বচ্ছ থাকে? গণমাধ্যমের সংবাদ তৈরি হয় একদিকে সাংবাদিকতার আদর্শ ও নৈতিকতার ভিত্তিতে, অন্যদিকে অর্থনৈতিক নির্ভরতা ও রাজনৈতিক চাপের প্রভাবে।
১. সাংবাদিকতার অর্থনীতি
প্রচলিত গণমাধ্যম যেমন সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল বিজ্ঞাপন নির্ভর। বিজ্ঞাপন রাজস্ব ছাড়া তারা টিকে থাকতে পারে না। এর ফলে অনেক সময় বিজ্ঞাপনদাতাদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সংবাদ নির্বাচন করা হয়।
👉 উদাহরণ: বাংলাদেশে
অনেক টেলিভিশন নাটক বা অনুষ্ঠান
মাঝপথে স্পনসরের কারণে পরিবর্তন বা স্থগিত হয়েছে।
সংবাদও একইভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
২. রাজনৈতিক চাপ
গণতান্ত্রিক সমাজে সংবাদ হওয়া উচিত নিরপেক্ষ। কিন্তু বাস্তবে রাজনৈতিক দলগুলো সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব খাটায়। এর ফলে কিছু সংবাদ প্রচারিত হয় না, কিছু আবার অতিরঞ্জিত হয়।
👉 উদাহরণ: ২০১৪
সালের নির্বাচনের সময় অনেক চ্যানেল
নির্দিষ্ট পক্ষের অবস্থানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে,
আবার ২০১৮ সালের ছাত্র
আন্দোলনের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ
ঘটনাকে আংশিকভাবে প্রচার করেছে।
৩. পক্ষপাত ও নৈতিক দ্বন্দ্ব
সাংবাদিকরা অনেক সময় দ্বিধার মধ্যে থাকেন—সত্য প্রকাশ করবেন, নাকি চাকরি ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ দেখবেন। এর ফলে পক্ষপাত দেখা দেয়। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে জনগণও অনেক সময় সংবাদে পক্ষপাত বুঝে ফেলে, যা আস্থার সংকট তৈরি করে।
৪. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম একদিকে উন্নয়ন, সচেতনতা ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেয়, অন্যদিকে অর্থনীতি ও রাজনৈতিক চাপে স্বাধীনতা হারায়। বিশেষ করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় দেখা গেছে—প্রচলিত মিডিয়া অনেক তথ্য দিতে পারেনি, তাই মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার দিকে ঝুঁকেছে।
সংবাদ হলো জনস্বার্থের হাতিয়ার। কিন্তু যখন অর্থনীতি ও রাজনৈতিক চাপ সংবাদকে বিকৃত করে, তখন নৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তাই জনগণের সচেতনতা এবং সাংবাদিকদের সাহসিকতাই সংবাদকে প্রকৃত অর্থে বিশ্বাসযোগ্য রাখতে পারে।
পরবর্তী বিষয়:
গেমস ও প্রতিযোগিতা: গেম কনটেন্টের কাঠামো, সহিংসতা বনাম সৃজনশীলতা, ই-স্পোর্টস সংস্কৃতি।
ভিডিও প্রতিবেদন দেখুন এখানে
আরও জানুন: মিডিয়া লিটারেসি ▶️ [প্লেলিস্ট লিঙ্ক]