| ফ্যাক্ট চেক

গাজাগামী ফ্লোটিলা থেকে আটক শহিদুল আলমের ভিডিওবার্তাটি প্রি-রেকর্ডেড, মোটেই সাজানো নয়

৮ অক্টোবর ২০২৫


বিভ্রান্তিকর

গাজাগামী মিডিয়া ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ফেসবুক পেজে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে শহিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, “যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন, তাহলে বুঝবেন আমাদেরকে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী আটক ও অপহরণ করেছে।”


ভিডিওটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার সাবেক উপ–প্রেস সচিব মো. আশরাফুল আলম খোকন ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে ব্যঙ্গ করে প্রশ্ন তোলেন, আটক করা হলে শহিদুল আলম কীভাবে ভিডিও রেকর্ড করে পোস্ট দিলেন?একই ধরনের মন্তব্য আওয়ামী লীগ–ঘনিষ্ঠ একাধিক ফেসবুক পেজ থেকেও ছড়ানো হচ্ছে।


কনশানস জাহাজের যাত্রীরা যে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন, তা আল জাজিরা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, বিবিসি টাইমস অব ইসরায়েল–এর প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ উভয় তরফ থেকেই এই আটকের তথ্য প্রকাশ করা হয়।


আলোচিত ভিডিওতে শহিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, “যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন…”। স্পষ্টত এটি আগে থেকে রেকর্ডিং করা ভিডিও। ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া যাত্রীরা এমন ভিডিও আগে থেকেই প্রস্তুত রাখেন, যাতে আটক হওয়ার পর সেগুলো প্রকাশ করা যায়। চলতি বছরের জুনে Freedom Flotilla Coalition–এর “Madleen” জাহাজে অংশ নেওয়া কর্মীরা আটক হওয়ার পর তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকেও অনুরূপ প্রি–রেকর্ডেড ভিডিওবার্তা প্রকাশিত হয়েছিল।


আলোচিত ভিডিওটি পোস্ট করার প্রায় দুই ঘন্টা পূর্বে শহীদুল আলম Israelis approaching conscience লিখে ১মিনিট ১৫ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। ইসরায়েলি বাহিনী যে তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল, এই ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন।


উল্লেখ্য, গত শনিবার দিবাগত রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে শহিদুল আলম ভুলবশত একটি পোস্ট দিয়েছিলেন, যেখানে লেখা ছিল, “আমি শহিদুল আলম বাংলাদেশের একজন আলোকচিত্রী ও লেখক। আপনারা যদি এই ভিডিওটি দেখেন, সাগরে আমাদের আটক করা হয়েছে এবং আমাকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী অপহরণ করেছে।”


পরে রাত ১:৫০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে লেখেন, “আগের ভয়টা দেওয়ার জন্য দুঃখিত। ওই লেখাটা আসলে একটা ভিডিওর স্ক্রিপ্ট ছিল, যা আমরা আইডিএফের হাতে ধরা পড়লে প্রকাশ করার জন্য তৈরি করেছিলাম।” অর্থাৎ এটি স্পষ্ট যে ভিডিওটি আগে থেকে রেকর্ড করা ছিল এবং আটকের পর প্রকাশের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল।


শহিদুল আলমের ফেসবুক পেইজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তার ফেইসবুক পেইজটি Bangladesh Stands With Palestine এবং Free Shahidul অ্যাক্টিভিস্টরা পরিচালনা করবেন।


আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন ও দমননীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার থাকায় শহিদুল আলমকে ঘিরে পরিকল্পিতভাবে অপতথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।

আপনার মতামত দিন

এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?

আপনার মতামত শেয়ার করুন:




ফ্যাক্ট চেক

গাজাগামী ফ্লোটিলা থেকে আটক শহিদুল আলমের ভিডিওবার্তাটি প্রি-রেকর্ডেড, মোটেই সাজানো নয়

৮ অক্টোবর ২০২৫

গাজাগামী ফ্লোটিলা থেকে আটক শহিদুল আলমের ভিডিওবার্তাটি প্রি-রেকর্ডেড, মোটেই সাজানো নয়

গাজাগামী মিডিয়া ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ফেসবুক পেজে আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে শহিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, “যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন, তাহলে বুঝবেন আমাদেরকে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী আটক ও অপহরণ করেছে।”


ভিডিওটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার সাবেক উপ–প্রেস সচিব মো. আশরাফুল আলম খোকন ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে ব্যঙ্গ করে প্রশ্ন তোলেন, আটক করা হলে শহিদুল আলম কীভাবে ভিডিও রেকর্ড করে পোস্ট দিলেন?একই ধরনের মন্তব্য আওয়ামী লীগ–ঘনিষ্ঠ একাধিক ফেসবুক পেজ থেকেও ছড়ানো হচ্ছে।


কনশানস জাহাজের যাত্রীরা যে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন, তা আল জাজিরা, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, বিবিসি টাইমস অব ইসরায়েল–এর প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ উভয় তরফ থেকেই এই আটকের তথ্য প্রকাশ করা হয়।


আলোচিত ভিডিওতে শহিদুল আলমকে বলতে শোনা যায়, “যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন…”। স্পষ্টত এটি আগে থেকে রেকর্ডিং করা ভিডিও। ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া যাত্রীরা এমন ভিডিও আগে থেকেই প্রস্তুত রাখেন, যাতে আটক হওয়ার পর সেগুলো প্রকাশ করা যায়। চলতি বছরের জুনে Freedom Flotilla Coalition–এর “Madleen” জাহাজে অংশ নেওয়া কর্মীরা আটক হওয়ার পর তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকেও অনুরূপ প্রি–রেকর্ডেড ভিডিওবার্তা প্রকাশিত হয়েছিল।


আলোচিত ভিডিওটি পোস্ট করার প্রায় দুই ঘন্টা পূর্বে শহীদুল আলম Israelis approaching conscience লিখে ১মিনিট ১৫ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। ইসরায়েলি বাহিনী যে তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল, এই ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন।


উল্লেখ্য, গত শনিবার দিবাগত রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে শহিদুল আলম ভুলবশত একটি পোস্ট দিয়েছিলেন, যেখানে লেখা ছিল, “আমি শহিদুল আলম বাংলাদেশের একজন আলোকচিত্রী ও লেখক। আপনারা যদি এই ভিডিওটি দেখেন, সাগরে আমাদের আটক করা হয়েছে এবং আমাকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী অপহরণ করেছে।”


পরে রাত ১:৫০ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে লেখেন, “আগের ভয়টা দেওয়ার জন্য দুঃখিত। ওই লেখাটা আসলে একটা ভিডিওর স্ক্রিপ্ট ছিল, যা আমরা আইডিএফের হাতে ধরা পড়লে প্রকাশ করার জন্য তৈরি করেছিলাম।” অর্থাৎ এটি স্পষ্ট যে ভিডিওটি আগে থেকে রেকর্ড করা ছিল এবং আটকের পর প্রকাশের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল।


শহিদুল আলমের ফেসবুক পেইজে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, তিনি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তার ফেইসবুক পেইজটি Bangladesh Stands With Palestine এবং Free Shahidul অ্যাক্টিভিস্টরা পরিচালনা করবেন।


আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন ও দমননীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার থাকায় শহিদুল আলমকে ঘিরে পরিকল্পিতভাবে অপতথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।