| এক্সপ্লেইনার

ব্যাক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বাংলাদেশের কৃষক ও জনগণের সক্ষমতার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা

১৩ অক্টোবর ২০২৫



"১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াই, আশ্রয় দিচ্ছি ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে’'--রোমে ড. ইউনূসের বক্তব্যের এমন বয়ান তাঁর বক্তব্যের স্পিরিটের বিপরীত।


সোমবার (১৩ অক্টোবর) ইতালির রোমে বিশ্ব খাদ্য ফোরামের সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে একটি দেশ তার জনগণ, এবং আরও অনেকের খাদ্যের যোগান দেয়। বাংলাদেশে ছোট ভূমির দেশ হওয়া সত্ত্বেও, যা আয়তনে ইতালির প্রায় অর্ধেক, আমরা ১৭ কোটির বেশি মানুষকে খাওয়াই, পাশাপাশি মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকেও সহায়তা দেই।” বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে তাঁর এই বক্তব্যে তিনি দেশের কৃষিখাতের সক্ষমতার আরও কিছু উদাহরণ তুলে ধরেন।


বিভিন্ন গণমাধ্যম এটি নিয়ে ‘১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াই, আশ্রয় দিচ্ছি ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে’ শিরোনামে খবর ও ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে। শিরোনাম দেখে অনেকে মনে করছেন, ড. ইউনূস নিজের কৃতিত্ব হিসেবে “মানুষকে খাওয়াই”, এমন বক্তব্য দিয়েছেন। যেমন, ঢাকা পোস্টের ফটোকার্ডে একজন মন্তব্য করেছেন, “এটা তো হাসিনার বক্তব্যের মতোই”। এক্ষেত্রে স্মরণ করা যেতে পারে যে, শেখ রেহানা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘তুমি ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারো, আর ১০ লাখ মানুষকে খাওয়াতে পারবা না?’ এখানে কোটি মানুষের খাদ্য যোগানোর ব্যাপারটিকে নিজের কৃতিত্ব হিসেবে জাহির করেছিলেন শেখ হাসিনা।


কিন্তু ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের জাতীয় সক্ষমতা তুলে ধরেছেন। এরপরই তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য ধান উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। আমরা বিশ্বের শীর্ষ ধান, শাক-সবজি ও মিঠাপানির মাছ উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি। আমাদের কৃষকেরা ফসল চাষের ঘনত্ব ২১৪ শতাংশে উন্নীত করেছেন। আমরা ১৩৩টি জলবায়ু-সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছি।”


প্রতিটি বার 'আমরা' বলতে তিনি দেশের কৃষক ও জনগণকেই বুঝিয়েছেন। ফলে স্পষ্ট যে, ড. ইউনূসের বক্তব্য বাংলাদেশের কৃষি খাতে জাতীয় সক্ষমতা বিষয়ে ছিল, ব্যক্তিগত অহমিকার বিষয়ে ছিল না।

আপনার মতামত দিন

এই পোস্টটি কি আপনার জন্য সহায়ক ছিল?

আপনার মতামত শেয়ার করুন:




এক্সপ্লেইনার

ব্যাক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বাংলাদেশের কৃষক ও জনগণের সক্ষমতার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা

১৩ অক্টোবর ২০২৫

ব্যাক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বাংলাদেশের কৃষক ও জনগণের সক্ষমতার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা

"১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াই, আশ্রয় দিচ্ছি ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে’'--রোমে ড. ইউনূসের বক্তব্যের এমন বয়ান তাঁর বক্তব্যের স্পিরিটের বিপরীত।


সোমবার (১৩ অক্টোবর) ইতালির রোমে বিশ্ব খাদ্য ফোরামের সমাবেশে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে একটি দেশ তার জনগণ, এবং আরও অনেকের খাদ্যের যোগান দেয়। বাংলাদেশে ছোট ভূমির দেশ হওয়া সত্ত্বেও, যা আয়তনে ইতালির প্রায় অর্ধেক, আমরা ১৭ কোটির বেশি মানুষকে খাওয়াই, পাশাপাশি মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকেও সহায়তা দেই।” বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে তাঁর এই বক্তব্যে তিনি দেশের কৃষিখাতের সক্ষমতার আরও কিছু উদাহরণ তুলে ধরেন।


বিভিন্ন গণমাধ্যম এটি নিয়ে ‘১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াই, আশ্রয় দিচ্ছি ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে’ শিরোনামে খবর ও ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে। শিরোনাম দেখে অনেকে মনে করছেন, ড. ইউনূস নিজের কৃতিত্ব হিসেবে “মানুষকে খাওয়াই”, এমন বক্তব্য দিয়েছেন। যেমন, ঢাকা পোস্টের ফটোকার্ডে একজন মন্তব্য করেছেন, “এটা তো হাসিনার বক্তব্যের মতোই”। এক্ষেত্রে স্মরণ করা যেতে পারে যে, শেখ রেহানা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘তুমি ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারো, আর ১০ লাখ মানুষকে খাওয়াতে পারবা না?’ এখানে কোটি মানুষের খাদ্য যোগানোর ব্যাপারটিকে নিজের কৃতিত্ব হিসেবে জাহির করেছিলেন শেখ হাসিনা।


কিন্তু ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের জাতীয় সক্ষমতা তুলে ধরেছেন। এরপরই তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য ধান উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। আমরা বিশ্বের শীর্ষ ধান, শাক-সবজি ও মিঠাপানির মাছ উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি। আমাদের কৃষকেরা ফসল চাষের ঘনত্ব ২১৪ শতাংশে উন্নীত করেছেন। আমরা ১৩৩টি জলবায়ু-সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছি।”


প্রতিটি বার 'আমরা' বলতে তিনি দেশের কৃষক ও জনগণকেই বুঝিয়েছেন। ফলে স্পষ্ট যে, ড. ইউনূসের বক্তব্য বাংলাদেশের কৃষি খাতে জাতীয় সক্ষমতা বিষয়ে ছিল, ব্যক্তিগত অহমিকার বিষয়ে ছিল না।